যুবলীগ নেতা নাসির হত্যাচেষ্টা : ‘আসামিরা ঘুরে বেড়ায়, পুলিশ ধরে না’

Looks like you've blocked notifications!
রাঙামাটিতে বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা নাসিরকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আজ রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে পরিবারের স্বজন, সহযোদ্ধা ও প্রতিবেশীরা। ছবি : এনটিভি

রাঙামাটিতে বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা নাসিরকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

আজ রোববার সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে পরিবারের স্বজন, সহযোদ্ধা ও প্রতিবেশীরা এই অভিযোগ করেন। মানববন্ধন থেকে অবিলম্বে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে নাসিরের মা, স্ত্রী, সন্তানরা ছাড়াও প্রতিবেশী ও এলাকার সাধারণ মানুষজন উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে নাসিরের মা অভিযোগ করে বলেন, ‘নাসিরের উপর হামলার ঘটনার ১২ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করেনি, পুলিশ মামলা নিতেও চায়নি, পুলিশ আসামি ধরতে টালবাহানা করছে। আসামিদের গ্রেপ্তার না করায় আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়ে নানা হুমকি দিচ্ছে। আসামি গ্রেপ্তার না করায় আমাদের পরিবারের সদস্যরা এখন আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।’

মামলার বাদী নাসিরের স্ত্রী সালেহা বেগম বলেন, ‘আসামিরা এত শক্তিশালী যে, পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে তারা ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে না। আসামিরা নানাভাবে আমার স্বামীকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে, আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

নাসিরের ভাই আতাউর রহমান ও মাহবুব বলেন, আসামি আবদুল জব্বার সুজন, মিজান ও আরিফ জামায়াত-শিবিরের কায়দায় নাসিরের রগকেটে দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছিল। নাসিরের শরীরে নৃশংস হামলা চালিয়ে তাঁকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। বার বার বলার পরও পুলিশ আসামি ধরতে কোনো কর্ণপাত করছে না। আসামিদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান নাসিরের দুই ভাই।

বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা নাসির অভিযোগ করে বলেন, ‘দুই বছর আগের ঘটনার অভিযোগ এনে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ যাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়, তাদের বহিষ্কার তো দূরের কথা তাদের পদও স্থগিত করা হয় না। এখানে কালো টাকার খেলা চলছে, আমরা গরিব আমাদের পাশে কেউ নেই। দু:সময়ের নেতাকর্মীরা বার বারই উপেক্ষিত থাকে।’

বিষয়টি নিয়ে রাঙামাটি জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ কাজল বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি দলীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসা করতে, জেলা আওয়ামী লীগ থেকে ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে, আমরা বৈঠকে বসেছি, আরো বসব।’

রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম রনি এ ব্যাপারে বলেন, ‘আসামি ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে, শিগগির একটা ফলাফল পাবেন।’

চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয় হয় রাঙামাটি শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিরকে। পরে নাসির চাঁদাবাজির বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছে ‘নেপথ্যের লোকদের’ নিয়ে মুখ খুললে ২৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তাঁকে সমঝোতার কথা বলে ডেকে নিয়ে মাথা এবং পায়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের সামনে ফেলে রেখে যায় একদল দুর্বৃত্ত। 

সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নাসিরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার দিন মামলা করতে গেলেও পুলিশ গড়িমসি শুরু করে। ঘটনার তিনদিন পর আটজনের নাম উল্লেখ করে পুলিশ মামলা নেয়।

নাসিরের স্ত্রী সালেহা আক্তারের দায়ের করা এই মামলার আসামিরা হলেন রাঙামাটি শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন, জেলা যুবলীগের সহ-সম্পাদক মো. মিজান, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য মো. শাকিল, ছাত্রলীগকর্মী আজমীর, কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দীপংকর দে, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহাব খানসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন।