যৌতুকের টাকা না পেয়ে ছেলেকেই হত্যা!
পারিবারিক কলহ ও শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা না পেয়ে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে নিজের সাড়ে তিন বছরের শিশুসন্তান মাহিমকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করেছেন জুলহাস (৩১)। এমনটা দাবি করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বলছে, এরপর সেই বাবাই একদিন পর গিয়ে সন্তানকে অপহরণ ও মুক্তিপণ চাওয়ার লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১০-এর পরিচালক কাইমুজ্জমান খান এই দাবি করেন।
কাইমুজ্জমান খান বলেন, ‘জুলহাস আগে থেকে শ্বশুরবাড়ির কাছে যৌতুকের টাকা দাবিসহ বিদেশ যাওয়ার জন্য চার লাখ টাকা চেয়ে আসছিলেন। সেই টাকা না পেয়ে স্ত্রীকেও নির্যাতন করতেন। এক ধরনের ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে প্রতিবেশী জুয়েলকে নিয়ে তিনি নিজের শিশু সন্তানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ২৬ জুন জুয়েলকে আটটি ঘুমের ওষুধ কিনতে বলেন জুলহাস।’
কাইমুজ্জমান খান আরো বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে ২৭ জুন মাহিমকে তার বাড়ির সামনে থেকে ফুসলিয়ে জুয়েল পূর্ব নির্ধারিত মাতুয়াইল বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যায়। সেখানে জুলহাস ছিলেন। পরে থেকে তারা ডেমরায় যান। জুলহাস ও জুয়েল জুসের সঙ্গে মাহিমকে আটটি ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। মাহিমের মৃত্যু নিশ্চিত করার পর যাত্রাবাড়ী থানার মাতুয়াইলের গ্রিন মডেল টাউন এলাকার কাশবনের ভেতরে বালু চাপা দিয়ে দেয়।’
র্যাব অধিনায়ক বলেন, ‘একদিন পর অর্থাৎ ২৯ জুন জুলহাস ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে মর্মে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এজন্য জুয়েলের মুঠোফোন থেকে জুলহাসের নম্বরে টাকা চেয়ে একটি বার্তাও পাঠানো হয়। ওই দিনই জিডির কপি নিয়ে র্যাব-১০-এ গিয়ে তিনি একটি লিখিত অভিযোগ জানান।’
কাইমুজ্জমান খান বলেন, ‘সব তথ্য যাচাই-বাছাই ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১০-এর একটি অভিযানিক দল মাতুয়াইলের রাজমহল হোটেলের সামনে থেকে অপহরণের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে জুয়েলকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাবাসাদে জুয়েল জুলহাসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করে। এরপর মাতুয়াইল এলাকায় শরীফ মোড় থেকে জুলহাসকে আটক করে র্যাব। এই ঘটনায় ভিকটিমের মা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’