যৌন হয়রানির শিকার স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
জয়পুরহাটে যৌন হয়রানির অপমান সহ্য করতে না পেরে ঘটনার ১০ দিনের মাথায় শাম্মী আখতার মিলি নামের অষ্টম শ্রেণির প্রতিবন্ধী এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি পরিবারের। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার বাঘাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
শাম্মী আখতার মিলি বাঘাপাড়া গ্রামের মিলন মিয়ার মেয়ে। তার পরিবারের দাবি, যৌন নির্যাতনের অপমান সহ্য করতে না পেরে লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যা করেছে মিলি।
কিশোরীর পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, বাঘাপাড়া গ্রামের মামনুল ইসলামের ছেলে রফিকুল দীর্ঘদিন থেকে ওই শিক্ষার্থীকে (১৪) বিরক্ত করে আসছিলেন। গত ৭ নভেম্বর বড়তারা হাইস্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে অন্যদের সঙ্গে শাম্মী আখতারও উপস্থিত হয়েছিল। অনুষ্ঠান শেষ করে বিকেল ৫টার দিকে সে বাড়ি ফেরার সময় পথে বড়তারা গ্রামের শাহিনুর রহমানের তার দেখা হয়। শাহিনুর তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তার মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে ভিন্ন পথ ঘুরিয়ে স্কুলের পরিত্যক্ত ঘরের সামনে নামিয়ে দেন। ওই সময় রফিকুল এসে ওই কিশোরীকে কৌশলে স্কুলের পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যৌন হয়রানি করলে সে কান্নাকাটি শুরু করে। তার কান্না শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে অভিযুক্ত রফিকুল পালিয়ে যান।
এ ঘটনার পরের দিন ৮ নভেম্বর রফিকুল ও শাহিনুরকে আসামি করে ক্ষেতলাল থানায় যৌন হয়রানির মামলা হলেও এখন পর্যন্ত আসামিদের কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, আসামিরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করায় উল্টো তারাই হুমকি দিচ্ছিল। ওই ঘটনার পর থেকে মেয়েটি স্বাভাবিক হতে পারেনি বলে লোকলজ্জায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়।
এ ব্যাপারে ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নীরেন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘আগের ঘটনায় আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তদন্তে কিশোরীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার বিষয়টি প্রমাণিত হলে আসামিদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করা হবে। ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।’