রফিকুল ইসলাম মাদানীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি
আলোচিত ‘শিশুবক্তা’ মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে হেফাজত ইসলাম নেত্রকোনা জেলা শাখা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নেত্রকোনা প্রেসক্লাব ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানানো হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি ও জেলার শাখার সদস্য মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, রফিকুল ইসলাম মাদানীর বড় ভাই রমজান মিয়া, চাচাতো ভাই নজরুল ইসলামসহ হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে বড় ভাই রমজান মিয়া বলেন, মাদানী গত সোমবার ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার লেটিকান্দা গ্রামে আসে। মঙ্গলবার ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে ওয়াজ মাহফিল শেষে রাতে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান নেয়। পরে দিবাগত রাত ২টার দিকে র্যাব পরিচয়ে বেশ কয়েকজন বাড়ি থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। আমরা তাঁর নিঃশর্ত মুক্তি চাই।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, রফিকুল ইসলাম মাদানীকে নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে আগামীকাল মানববন্ধনসহ কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
এর আগে রাষ্ট্রবিরোধী, উসকানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টার অভিযোগে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে নেত্রকোনা থেকে আটক করার কথা জানায় র্যাব।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিষয়টি নিশ্চিত করে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আজ বুধবার নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা থেকে তাঁকে আটক করা হয়।’
খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, ‘রফিকুল ইসলাম মাদানী নানা সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে থাকেন। তিনি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি রাষ্ট্রবিরোধী নানা উসকানিমূলক কথাবার্তা বলেন। এতে জনমনে ভীতির সঞ্চার হয়েছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে।'
র্যাবের কর্মকর্তা বলেন, ‘শিশুবক্তার এসব ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথাবার্তা জনসাধারণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে, যা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানানো হবে।'
নেত্রকোনা জেলার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম মাদানী বয়সে যুবক হলেও শারীরিক গঠনের কারণে তাঁকে শিশুর মতো দেখায়। গলার স্বরও অনেকটা শিশুর মতোই। তিনি ধর্মীয় বক্তা হিসেবে জনপ্রিয়। এই কারণে লোকজন তাঁকে ‘শিশুবক্তা’ বলে অভিহিত করে থাকেন। যদিও এই নাম নিয়ে তিনি নিজেও অনেক সময় আপত্তি করেছেন।
এর আগে গত ২৫ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় বিক্ষোভ চলাকালে রফিকুল ইসলাম মাদানীসহ ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। কয়েক ঘণ্টা আটকে রেখে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।