রাজধানীতে আনসার আল ইসলামের চারজন গ্রেপ্তার

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীতে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের চার সদস্য। ছবি : ফোকাস বাংলা

রাজধানীতে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করার দাবি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি দল। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- জসিমুল ইসলাম ওরফে জ্যাক, আব্দুল মুকিত, আমিনুল হক ও সজীব ইখতিয়ার। গ্রেপ্তার করার সময় তাদের কাছ থেকে একটি ব্যাগ, একটি চাপাতি, পাঁচটি স্মার্ট ফোন ও দুটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয় বলে জানানো হয়েছে। 

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য। তারা উক্ত সংগঠনের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড সম্পাদনের উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মোহাম্মদপুরের বসিলাতে একত্রিত হয়।’

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, আনসার আল ইসলাম সংগঠনের দায়িত্বশীল বা ‘মাসুল’ ফরিদ ওরফে তারিক ও আবদুল্লাহর সহযোগিতায় মেসেঞ্জার চ্যাট গ্রুপ এবং ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃতরা আনসার আল ইসলাম সংগঠনের সদস্য হওয়ার জন্য দাওয়াতপ্রাপ্ত হয় এবং এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা সংগঠনের সদস্য হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা টেলিগ্রাম অ্যাপস ও অনলাইনে প্রোটেক্টেড টেক্সট নামক সিক্রেট চ্যাটিং অ্যাপস ব্যবহার করে একটি চ্যাটিং গ্রুপ তৈরি করে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করত এবং সংগঠনের আদর্শ প্রচার ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করত।

সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে গ্রেপ্তারকৃতরা সংগঠনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের নির্দেশে সিলেটের কোতোয়ালি থানা এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে হোটেল ম্যানেজারকে আহত করে পালিয়ে যায়। এই গ্রুপের সদস্যগণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টার্গেট করে হামলার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র সংগ্রহের মাধ্যমে প্রস্তুতি গ্রহণ করে বলে জানা যায়। তারা নিষিদ্ধ সংগঠনের আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অনলাইনে টেলিগ্রাম অ্যাপে ‘সায়েন্স প্রজেক্ট’ শিরোনামে গ্রুপ তৈরি করে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করে বিস্ফোরক প্রস্তুতের চেষ্টা করেছিল। এ সংক্রান্তে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে জব্দকৃত ডিভাইস পর্যালোচনা করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।

'গ্রেপ্তারকৃতরা আরও জানায়, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসার আল ইসলামের আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কথিত জিহাদের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য এই গ্রুপের কতিপয় সদস্য কিছুদিন আগে কথিত ‘হিজরত’ করে আফগানিস্তানে গমন করেছে। সম্প্রতি তারাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা করে কথিত হিজরতের মাধ্যমে আফগানিস্তান পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। এই লক্ষ্যে তারা পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের ওপর হামলার উদ্দেশ্যে রেকি সম্পন্ন করে বলে গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়', যোগ করেন আসাদুজ্জামান।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া জসিমুল হক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অতীশ দীপংকর ইউনিভার্সিটির বিবিএ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। আব্দুল মুকিত হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার মারকাজুস সুন্নাহ্ আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক। আমিনুল হক আল হিদায়া ইসলামিক ইনস্টিটিউটের সিলেটের ছাত্র এবং সজীব ইখতিয়ার সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে। তাদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।’