রাজধানীতে এক রাতে তিন অস্বাভাবিক মৃত্যু, পরিবারের দাবি আত্মহত্যা
রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় প্রবাসীর স্ত্রীসহ তিন জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ বলছে, ওই তিন জনের পরিবারের দাবি—তাঁরা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। রাজধানীর শান্তিনগর, মুগদা ও খিলগাঁওয়ে গতকাল শনিবার রাতে এসব ঘটনা ঘটে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া আজ রোববার এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘তিন জনই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁদের পরিবার দাবি করেছে। এর মধ্যে রিনভী আক্তার নামের এক নারীর মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া তাঁর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে থানা পুলিশ। বাকি দুজনের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।’
নিহত তিন জন হলেন, শান্তিনগরের সাদিয়া (১৬), মুগদার বিদ্যুৎ (১৮) ও খিলগাঁওয়ের রিনভী আক্তার (২৩)।
এ বিষয়ে পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিসুর রহমান বলেন, ‘সাদিয়া ফরিদপুরের বাসিন্দা সাইদুল ইসলামের মেয়ে। সে বেশ কয়েক মাস ধরে শান্তিনগরের একটি বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত। রোববার রাতে বাসায় একাই ছিল সে। গৃহকর্তা পরিবারসহ নারায়ণগঞ্জের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা বাসায় ফিরে দেখেন যে, দরজা ভেতর থেকে বন্ধ।’
আনিসুর রহমান বলেন, ‘অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করেও কোনো শব্দ না পেয়ে বাসার নিরাপত্তাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে মিস্ত্রি এনে রুমের দরজা খোলা হয়। পরে রুমের ভেতরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় সাদিয়াকে দেখা যায়। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিস্তারিত তদন্তের পর ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
মুগদার ঘটনায় বাচ্চু মিয়া জানান, মুগদার উত্তর মান্ডা খালপাড় এলাকায় বাড়ির নিচতলায় দাদা-দাদির সঙ্গে থাকতেন বিদ্যুৎ। তিনি নবাবগঞ্জের মৃত কামাল হোসেনের ছেলে। তাঁর চাচা আবুল কালাম জানান, বিদ্যুৎ রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। গত শনিবার রাতে খাবার খেয়ে তিনি রুম থেকে দ্রুত বের হয়ে যান। এতে বিদ্যুতের ছোট চাচার সন্দেহ হলে কিছুক্ষণ পর তাঁকে খুঁজতে বের হন। রাত ১১টার দিকে বাড়ির ছাদে পানির পাইপের সঙ্গে দড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তাঁকে দেখতে পাওয়া যায়। পরে পুলিশে খবর দিলে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।’
খিলগাঁওয়ের ঘটনায় বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘খিলগাঁওয়ের তালতলায় মায়ের সঙ্গে রাগারাগি করে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে রিনভী আক্তার নামে এক নারী গলায় ফাঁস দিয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। তাঁর স্বামী রাসেল যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। শনিবার রাত ১১টার দিকে তিনি গলায় ফাঁস দেন বলে জানানো হয়েছে। পরে পরিবারের সদস্যেরা গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তাঁকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।’