রাজধানীতে বেড়ে চলেছে ডায়রিয়ার প্রকোপ
রাজধানী ঢাকায় ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া। হাসপাতালগুলোতে এ রোগে আক্রান্তদের উপচে পড়া ভিড়।
কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজধানীতে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশে (আইসিডিডিআর,বি) রোগীর লম্বা সারি। গত সোমবার ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল প্রতিষ্ঠানটির ৬০ বছরের ইতিহাসের মধ্যে সর্বাধিক। এরপর সে রেকর্ড না পার হলেও থাকছে কাছাকাছি।
আইসিডিডিআর,বির বলছে, গত সোমবার এক হাজার ৩৮৩ রোগী ভর্তি হন। এটি ছিল আইসিডিডিআর,বি’র ৬০ বছরের ইতিহাসের মধ্যে সর্বাধিক।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি থেকে মার্চ) সাড়ে চার লাখের বেশি মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ হাজারের বেশি রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছে আইসিডিডিআর,বি’র মহাখালী হাসপাতাল।
গত তিন মাসের হিসাবে দেখা যায়, ডায়রিয়ায় সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৫৯ হাজার ২৪৭ জন। আর, সবচেয়ে কম আক্রান্ত হয়েছে বরিশাল বিভাগে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আইডিডিডিআর,বি’তে আজ শনিবার পর্যন্ত সোমবারের সে রেকর্ড না পার হলেও রোগী ভর্তির সংখ্যা থাকছে সেই রেকর্ডের খুব কাছাকাছি। প্রতিদিনই এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৩৫০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। আজ শনিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচশ রোগী ভর্তি হয়েছেন।
রাজধানীবাসী বলছেন, পরিস্থিতি দিনদিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। অনেকেই বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। খুব বেশি সমস্যায় না পড়লে হাসপাতালে যাচ্ছেন না। ফলে যে পরিসংখ্যান দেখা যাচ্ছে, তারচেয়েও মারাত্মক অবস্থায় রয়েছে ডায়রিয়া পরিস্থিতি।
আইসিডিডিআর,বি’তে গিয়ে দেখা যায়, দুটি বাড়তি তাঁবু করা হয়েছে। তারপরও রোগীর চাপ সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। তবে, লোকবলের কোনো সংকট নেই বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সংকট রয়েছে স্থানের। এজন্য স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে সমাধান না হলে তবেই আইসিডিডিআর,বি’তে আসার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এমন পরিস্থিতি এড়াতে স্বাস্থ্য সচেতনতার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা বলছেন, পানিবাহিত রোগ হলেও একই পরিবারের সবাই আক্রান্ত হচ্ছেন না। ফলে পানি দায়ী থাকলেও পানিই মূল কারণ না-ও হতে পারে। বাইরে পানি পান, খাবার খাওয়া একটি কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।
এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা বিশুদ্ধ পানি পানের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে ফুটিয়ে পানি পান করার কথা বলছেন তাঁরা। পরিহার করতে বলেছেন রাস্তার পাশের খাবার।