রাজশাহীতে ওয়াসার পানির দাম বেড়েছে তিনগুণ
বাসা-বাড়ি ও বাণিজ্যিক পানির মূল্য তিন গুণ বাড়িয়েছে রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা)। আজ মঙ্গলবার থেকেই পানির বর্ধিত এ দাম কার্যকর হয়েছে।
এর আগে গত মাসে রাজশাহী ওয়াসা তাদের ওয়েবসাইট ও সংবাদপত্রে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পানির দাম তিন গুণ বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল।
রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘তাদের পরিচালনা বোর্ড পানির উৎপাদন খরচ ও সরবরাহের খরচ সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আইন অনুযায়ী পানির হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পানি উত্তোলনের খরচ বেড়েছে এবং সরবরাহ ব্যয়ও বেড়েছে। এর মধ্যেই সেবার মানও বাড়াতে হয়েছে।’
ওয়াসার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আবাসিক পানির দাম যা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতি হাজার লিটারে ২ টাকা ২৭ পয়সা ছিল, তা বাড়িয়ে প্রতি হাজার লিটার ৬ দশমিক ৮১ টাকা করা হয়েছে। আর বাণিজ্যিক পানির দাম যা আগে প্রতি হাজার লিটার ছিল ৪ টাকা ৫৪ পয়সা, তা বাড়িয়ে ১৩ টাকা ৬২ পয়সা করা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, নতুন মূল্য ভবনে ব্যবহৃত পাইপের ব্যাস ও তলার ভিত্তিতে করা হবে।
ওয়াসা কর্মকর্তারা জানান, যেসব পানির সংযোগে এখনও মিটার নেই, সেসব সংযোগের পাইপ ও ভবনের তলার ওপর নির্ভর করে পানির দাম সমন্বয় করা হবে। নিচতলায় আধা ইঞ্চি পাইপের মাধ্যমে ওয়াসার পানি ব্যবহারের জন্য প্রতি মাসে ন্যূনতম ১৫০ টাকা এবং ১০তলায় ৮২৫ টাকা ধার্য করা হবে। নিচতলায় এক ইঞ্চি পাইপের মাধ্যমে পানি ব্যবহার করার জন্য বাসিন্দাদের ৩৭৫ টাকা এবং ১০তলায় ২ হাজার ৭০ টাকা দিতে হবে। দ্বিতীয় থেকে নবম তলা বা এর উপরের তলা পর্যন্ত পানির বিল আনুপাতিক হারে বাড়বে। এর আগে ২০১৪ সালে একবার পানির মূল্য বাড়ানো হয়েছিল।
রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. জামাত খান বলেন, ‘পানির দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয় এবং এটা জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী। মহামারি পরিস্থিতির কারণে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদ করতে পারেননি। তবে তারা শিগগিরই এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাবেন।’
জামাত খান আরও বলেন, ‘ওয়াসার সার্ভিস আশানুরূপ নয়। তারা সব এলাকায় পানি সরবরাহ করতে পারে না। যেখানে সরবরাহ করে অনেক ক্ষেত্রে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা ও জীবাণুযুক্ত পানি সরবরাহ করে। সম্প্রতি সরকারি পর্যবেক্ষণেও ওয়াসার পানিতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় পানির দাম একেবারে তিন গুণ বাড়ানো করোনাকালীন অর্থাভাবে থাকা জনগণের ওপর চাপ বাড়ানো ছাড়া আর কিছুই নয়।’