রাজাকারের তালিকায় দুই রাজার নাম
রাজাকারের তালিকায় পার্বত্য চট্টগ্রামের দুই রাজার নাম রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত প্রথম পর্বের তালিকায় নাম রয়েছে বান্দরবান বোমাং সার্কেলের ১৫তম রাজা অং শৈ প্রু চৌধুরী এবং রাঙামাটির চাকমা সার্কেলের ৫০তম রাজা ত্রিদিব রায়।
তবে তৎকালীন তালিকাভুক্তদের মধ্যে প্রথমধাপে শুধু দুজন রাজাকারের নাম প্রকাশিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
জানা গেছে, রাজা অং শৈ প্রু চৌধুরী ১৯১৪ সালের ১ আগস্ট জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি বোমাং রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন। ২০১২ সালের ৮ আগস্ট তিনি ৯৮ বছর বয়সে নিজ বাড়ি বান্দরবানের মধ্যমপাড়ায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘ ১৪ বছর বোমাং রাজার দায়িত্ব পালন করেন।
অপরদিকে রাজা ত্রিদিব রায় ১৯৩৩ সালের ১৪ মে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৩ সালের ২ মে তিনি রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন। ২০১২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৭৯ বছর বয়সে পাকিস্তানের ইসলামাবাদ শহরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘ ১৮ বছর চাকমা রাজার দায়িত্ব পালন করেন।
বান্দরবানের সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এবং মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াব বলেন, বান্দরবান জেলায় তৎকালীন গেজেটভুক্ত ২৫ জন তালিকাভুক্ত রাজাকার রয়েছে। প্রথমধাপে প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের রাজাকারের তালিকায় তাদের মধ্যে শুধু রাজা অং শৈ প্রু চৌধুরীর নাম প্রকাশিত হয়েছে।
আবদুল ওয়াব বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজা অং শৈ প্রু চৌধুরীসহ জেলার আরো অনেকে দেশের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। অন্যদের নামও ধাপে ধাপে প্রকাশিত হবে। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাজাকারের তালিকার কপি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে।
আবদুল ওয়াব বলেন, ওই তালিকায় বান্দরবানের উচ্চ পদস্থ দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের অনেকের আত্মীয়-স্বজনের নামও রয়েছে। আমরা চাই দেশবাসীর স্বার্থে সব রাজাকারের নাম ঘোষণা করা হোক। অন্যথায় শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা শান্তি পাবে না।
রাঙামাটির মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রবার্ট রোনাল্ড পিন্টু বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রাজা ত্রিদিব রায় দেশের বিরুদ্ধে ছিলেন। শত্রু পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছেন রাজা ত্রিদিব রায়সহ রাঙামাটির আরো অনেকে। রাজাকারের তৎকালীন একটি তালিকাও রয়েছে। তবে সংখ্যাটি তাৎক্ষণিক মনে পড়ছে না। যুদ্ধে দেশের বিরুদ্ধে কাজ করা রাজাকারদের সবার নাম প্রকাশ করা দরকার।