রাতে ডাকাতি, দিনে ভিন্ন পেশা
রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের মূলহোতাসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা দিনে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকলেও রাতে করতেন ডাকাতি।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানা এলাকার কাঞ্চন ব্রিজ এলাকা থেকে মাইক্রোবাসসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, একটি শর্টগান, একটি পাইপগান, দুটি ম্যাগাজিন, পাঁচটি গুলি ও নগদ ৩১ হাজার টাকা এবং দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- হিটু মিয়া, ফরহাদ আলী, লিটন শেখ, রিপন মৃধা ওরফে জামাই রিপন, স্বপন মিয়া, জাকির ব্যাপারী, জলিল খাঁন, লক্ষণ চন্দ্র দাস, অজিত চন্দ্র সূত্রধর ও ইখতিয়ার হোসেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্যরা দিনের বেলায় বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকলেও সন্ধ্যায় ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। এই চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন স্বর্ণের দোকান, শিল্পকারখানা এবং ব্যাংকে ডাকাতি করত। গতরাতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে র্যাব-১ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অভিযান চালায়। এ সময় ডাকাতির জেন্য মাইক্রোবাসে অবস্থান করা ১০ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব কর্মকর্তা মোমেন আরও জানান, চক্রের সদস্যরা দেশের ১০ জেলার বসবাস করে। ডাকাতির পূর্বে তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা ঢাকাতে একত্রিত হতেন। ছদ্মবেশে ব্যাংক, স্বর্ণের দোকান, শিল্পকারখানার বাইরে অবস্থান করে দুই থেকে তিনজন ভেতরে প্রবেশ করে এবং মূল দলটি মাইক্রোবাসসহ সুবিধাজনক স্থানে অপেক্ষা করতে থাকে। এই চক্রের সদস্যরা একে অপরের যোগসাজশে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এর আগে ১১টি ডাকাতি করেছে।
তাদের বিরুদ্ধে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ মডেল ও সাভার থানা, ডিএমপির শাহআলী, মতিঝিল ও ডেমরা থানা, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানা, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানা, মানিকগঞ্জের ঘিওর থানাসহ বিভিন্ন থানায় ডাকাতি মামলা রয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, ডাকাতদলের অন্যতম হোতা ফরহাদ হোসেন। তাদের কথোপকথনের রেকর্ড আমরা শুনেছি, ফরহাদ আরেকজনকে বলেছেন- ‘অনেক তো ডাকাতি করেছি। এটাই শেষ ডাকাতি’। আর এ বারই ধরা খেলেন তিনি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই ডাকাতি পেশায় জড়িত ছিল।
আরেক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এই চক্রের মধ্যে কেউ সবজি বিক্রেতা, কেউ দোকানদার ছিল। মূলত তারা ডাকাতি করেই জীবিকা নির্বাহ করত। আমরা যেসব দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করেছি সেগুলো তারা ঢাকা থেকেই সংগ্রহ করেছে। ফরহাদ ও হিটু মিয়া তাদের কাছ থেকেই অস্ত্রগুলো পাওয়া গেছে। তারাই মূলত অস্ত্রের যোগানদাতা।