রাষ্ট্রপতিকে ইসি গঠনে আইন প্রণয়নসহ ১৪ প্রস্তাবনা গণফ্রন্টের

Looks like you've blocked notifications!
নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার আলোচনায় অংশ নিয়েছে গণফ্রন্টের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল। ছবি : স্টার মেইল

নির্বাচন কমিশন গঠনের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে চলমান সংলাপের ১১তম দিনে আজ বৃহস্পতিবার আলোচনায় অংশ নিয়েছেন গণফ্রন্ট। গণফ্রন্টের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বৈঠকে নতুন আইন প্রণয়নসহ ১৪ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে।

সংলাপ শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এক ব্রিফিংয়ে বলেন, আলোচনাকালে গণফ্রন্টের প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতিকে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করে।

প্রতিনিধিদল তিনজন মহিলা সদস্যসহ নয় সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করে। নির্বাচনে যাতে সরকারি হস্তক্ষেপ না থাকে নির্বাচনি আইনে সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট ঘোষণা রাখার প্রস্তাব দেন  গণফ্রন্টের নেতারা। তারা বলেন, নির্বাচনের সংলাপ বর্জন করলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না।

স্বাধীনতার পর সংসদে যেসব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব ছিল সেসব দলের সমন্বয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব করেন তারা।

বঙ্গভবনে তাদের স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ  বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা অপরিহার্য। তিনি বলেন, জনকল্যাণ নিশ্চিত করতে হলে সুস্থ রাজনীতি অপরিহার্য।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো পরিচালনায় সুষ্ঠু রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে হবে যাতে রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্ব জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে সক্ষম হয়।

এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

প্রেস সচিব জানান, রাষ্ট্রপতি এখন পর্যন্ত ১১ দিনে ১৬টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন।

গত ২০ ডিসেম্বর চলমান সংলাপের প্রথম দিনে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনায় বসেন রাষ্ট্রপতি। এর মধ্যে চারটি রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়নি। দলগুলো হলো বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি)।

প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ (বিএনপি) এ যাবত নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ২৮টি রাজনৈতিক দলকে বঙ্গভবনে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আগামী ৯ জানুয়ারি  কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সঙ্গে আলোচনা হবে সন্ধ্যা ৬টায় এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) সঙ্গে ওই দিন সন্ধ্যা ৭টায়।

১০ জানুয়ারি রোজ সোমবার সংলাপ হবে জাতীয় পার্টির (জেপি) সঙ্গে সন্ধ্যা ৬টায় এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সঙ্গে সন্ধ্যা ৭টায়।

মঙ্গলবার ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় সংলাপ হবে ইসলামী ফন্ট বাংলাদেশের সঙ্গে এবং ওই দিন সন্ধ্যা ৭টায় বৈঠক হবে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (বাংলাদেশ ন্যাপ) সঙ্গে।  

বিএনপির সঙ্গে সংলাপ হওয়ার কথা রয়েছে ১২ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) সঙ্গে একই দিনে সন্ধ্যা ৬টায় আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

রাষ্ট্রপতিকে সিইসি এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

গত কয়েকটি মেয়াদে রাষ্ট্রপতি ‘সার্চ কমিটি’র সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন।

বর্তমান নির্বাচন কমিশন পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি।

এ সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নতুন ইসি গঠন করবেন। আর এর অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।