রাস্তার নবজাতককে দত্তক নিলেন ডিসি

Looks like you've blocked notifications!
ভিক্ষুকের কাছে নবজাতকটি ফেলে চলে যায় এক নারী। সেই নবজাতককে দত্তক নিয়েছেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী। ছবি : সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভিক্ষুকের কাছে রেখে যাওয়া নবজাতককে দত্তক নিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী।

আজ মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের ডিসি শিশুটির অভিভাবকত্বের জন্য ২ নম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। দুপরে আবেদনটি বিবেচনা করে বিচারক মো. রফিকুল বারী এক আদেশে শিশুটিকে ডিসির হাতে তুলে দেন।

জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ বলেন, ‘নবজাতকটি পাওয়ার খবর শুনে আমি আমার স্ত্রী সুমনা আনোয়ারের সঙ্গে পরামর্শ করে শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করি। দত্তক পেয়ে আমরা খুবই খুশি হয়েছি। মেয়েটিকে আমরা নিজেদের সন্তানের মতোই লালনপালন করব। তাঁর মঙ্গল ও সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকবে সব সময়।’

জেলা প্রশাসক বর্তমানে এক কন্যা সন্তানের জনক। দত্তক নেওয়া শিশুটিও কন্যা।

শিশুটি বর্তমানে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানার তত্ত্বাবধানে আছে। লুবনা ফারজানা বলেন, ‘ডিসি স্যার নবজাতককে নিতে আগামী বৃহস্পতিবার আসবেন।’

গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ভৈরব বাসস্ট্যান্ড দুর্জয় মোড়ের দক্ষিণ পাশে একটি ওষুধের দোকানের সামনে বসা এক নারী ভিক্ষুকের কাছে কৌশলে নবজাতকটিকে রেখে তার মা পালিয়ে যায়।

ওষুধের দোকানের মালিক আশরাফুল আলম মুকুল বলেন, ‘অনেকক্ষণ পার হয়ে যাওয়ার পরও ওই নারী ফিরে না আসায় ভিক্ষুক নারী বিষয়টি আমাকে জানায়। কালো চাদর গায়ে জড়ানো এক নারী টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে কথা বলে নবজাতকটিকে দিয়ে যায়। আর ফিরে আসেনি।’

আশরাফুল আলম মুকুল আরো জানান, ‘বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি এলাকাবাসীর সহযোগিতায় নবজাতকটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।’

শিশুটি জেলা প্রশাসকের পরিবারে বড় হবে শুনে খুব খুশি আশরাফুল আলম মুকুল। তিনি বলেন, ‘কে জানত শিশুটির কপালে এত ভালো কিছু লেখা ছিল। যার কেউ নেই তার আল্লাহ আছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘যে দিন শিশুটিকে হাসপাতালে আনা হয়, তখন বয়স ছিল দুইদিন। শিশুটির যেন কোনো অযত্ন না হয়, সবাই সে ব্যাপারে খুবই তৎপর ছিল। শেষটা খুবই ভালো হয়েছে।’