রিজার্ভ চুরি : জরিমানা করা অর্থ চায় ঢাকা
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনকে (আরসিবিসি) করা জরিমানার দুই কোটি মার্কিন ডলার ফিলিপাইনের কাছে চেয়েছে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে চুরিতে জড়িতদের পরিচয় জানতে চাওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীতে দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় ‘ফরেন অফিস কনসালটেশন’-এ বিষয়গুলো উত্থাপন করে বাংলাদেশ। বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় সচিব (এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল) মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দাবি জানিয়ে বলেছি যে, আপনারা (ফিলিপাইন) অন্তত জরিমানার ওই অর্থটা আমাদের দিতে পারেন... এ জরিমানা তো একই ঘটনার (রিজার্ভ চুরি) কারণে করা হয়েছিল।’
বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদের নেতৃত্ব দেওয়া মাসুদ বিন মোমেন আরো জানান, কিছু অপরাধীর তথ্য ও পরিচয় এবং কিছু আর্থিক তথ্য চাওয়াসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে তাঁরা ফিলিপাইনের সহযোগিতা চেয়েছেন।
যদি এ দুটি বিষয় সমাধান হয় তাহলে এখানে দায়ের করা মামলায় অভিযোগপত্র দিতে বাংলাদেশের সুবিধা হবে জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, অপরাধীদের পরিচয় সরবরাহ এবং অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে ফিলিপাইন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ২১.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জরিমানা করেছিল আরসিবিসিকে।
মাসুদ বিন মোমেন জানান, ফিলিপাইন থেকে কিছু টাকা পাচার হয়ে যাওয়ায় সে বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে তদন্ত চলছে।
হ্যাকাররা ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন ব্যবস্থায় প্রবেশ করে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে ১৯৪ কোটি মার্কিন ডলার পরিশোধের ৭০টি ভুয়া নির্দেশ দেয়। তবে তারা ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি করতে সক্ষম হয়।
জরিমানার অর্থের বিষয়ে ফিলিপাইন বলছে, ব্যাংকিং আইন লঙ্ঘন করার দায়ে এ জরিমানা করা হয়েছে। এর সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থ চুরির সরাসরি সংযোগ নেই বলে দাবি দেশটির।
‘কিন্তু আমরা আমাদের দাবি জানাচ্ছি,’ উল্লেখ করে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এখানে আইনি জটিলতা থাকায় তাঁরা ধাপে ধাপে অগ্রসর হচ্ছেন।
বিষয়টি সমাধানের সময়সীমা প্রসঙ্গে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। কারণ, আইনি প্রক্রিয়ায় তাদের হাত নেই। তবে দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী সহযোগিতা হয়তো সমাধান এনে দিতে পারে। বিষয়টি আপসে সমাধান প্রসঙ্গে ফিলিপাইনও একমত বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, উভয় পক্ষ বৈঠকে স্বাস্থ্য, নার্সিং, কৃষি ও সমুদ্র সহযোগিতা বিষয়ে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক বিনিময় করেছে।