রিজেন্টে করোনা চিকিৎসায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে আইনি নোটিশ
বহুল আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার নামে প্রতারণায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে সরকার ও রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠন চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পরিচালক আজ রোববার অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানের পক্ষে ব্যারিস্টার আবদুল হালিম সংশ্লিষ্টদের প্রতি এই নোটিশ দিয়েছেন।
নোটিশে সরকারকে রিজেন্টের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করে দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে রিজেন্টে করোনার পরীক্ষায় ভুয়া সনদে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের তালিকা প্রকাশের দাবি জানানো হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এতে।
স্বাস্থ্য ও স্বরাষ্ট্র সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, যেসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করোনার পরীক্ষা করা হয়, তার তালিকা, চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য সারা দেশে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নাম ও সংখ্যা প্রকাশ করতে হবে। যেসব হাসপাতালে করোনার পরীক্ষা ও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, সেসব হাসপাতাল মনিটরিংয়ে প্রতিটি থানায় একটি করে কমিটি গঠন, রিজেন্ট থেকে ভুয়া করোনা সনদে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রকাশ এবং করোনায় সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি সপ্তাহে তাদের সেবা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ একটি প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায়, সে জন্য একটি নীতিমালা করতে বলা হয়েছে।
ব্যারিস্টার আবদুল হালিম বলেন, ‘সরকারপ্রধান অনেক টাকা প্রণোদনা দিচ্ছেন স্বাস্থ্যসেবার জন্য। কিন্তু মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের সঠিকভাবে তদারকি না করার কারণে এসব ঘটনা ঘটছে। এর দায় তারা এড়াতে পারে না। এখন দেখা যাচ্ছে অনেকের লাইসেন্স নেই, ভুয়া রিপোর্ট দিচ্ছেন। এসব মনিটরিংয়ে দায়িত্ব অধিদপ্তরের। কিন্তু তারা তা করতে পারেনি।’
অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বহীনতা আমাদের ভীষণ আঘাত করেছে। আমাদের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার মৌলিক অধিকারকে লঙ্ঘিত করেছে। চোখের সামনে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর প্রতারণা দেখেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চোখ বন্ধ করে আছে। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দায়িত্বে থেকে দায়িত্ব পালনে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।’
ভুয়া সনদ দেওয়ার অভিযোগে গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরার প্রধান শাখা ও মিরপুরের শাখায় অভিযান চালায় র্যাব। পরদিন ৭ জুলাই হাসপাতালের শাখা দুটির (উত্তরা ও মিরপুর) কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর ওই দিনই সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করা হয়। এ মামলায় সাহেদকে গ্রেপ্তারের পর ১৬ জুলাই আদালতে হাজির করা হয়।