রিমান্ড শুনানির জন্য আদালতে ইরফান

Looks like you've blocked notifications!
ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের ছেলে ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কমিশনার ইরফান সেলিম। ফাইল ছবি

নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হাজি মো. সেলিমের ছেলে কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইরফান সেলিমকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে পুলিশের করা আবেদনের শুনানি হবে আজ বুধবার। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গতকাল মঙ্গলবার এই আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমণ্ডি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আশফাক রাজীব হাসান।

কাউন্সিলর ইরফান সেলিম ও তাঁর সহযোগী জাহিদের রিমান্ড শুনানির জন্য আজ বুধবার সকাল পৌনে ১১টায় তাঁদের আদালতে আনা হয়েছে।

এর আগে আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মোহাম্মদ আশরাফ গতকাল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আদালতে ইরফানকে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর ও হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছে পুলিশ। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূর আগামীকাল (আজ) বুধবার ইরফানকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর উপস্থিতিতে এদিন রিমান্ড ও গ্রেপ্তারের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।’

গত রোববার রাতে নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খানকে মারধর ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পরদিন সোমবার সকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইরফান সেলিম, এ বি সিদ্দিক দিপু, মো. জাহিদ ও মিজানুর রহমানের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো দু-তিনজনকে আসামি করে ধানমণ্ডি থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন ওয়াসিফ আহমদ খান।

মামলার পর গত সোমবার দুপুর থেকে র‍্যাব সদস্যরা রাজধানীর চকবাজারের ২৬ দেবীদাস ঘাট লেনে ‘চাঁন সরদার দাদা বাড়ী’তে অভিযান চালান। অভিযানে নেতৃত্ব দেন র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। অভিযান শেষে অবৈধ ওয়াকিটকি ও মাদক রাখার দায়ে ইরফান সেলিম ও তাঁর দেহরক্ষী মো. জাহিদকে এক বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেন র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপর রাতে দুজনকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

গত সোমবার সন্ধ্যায় র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, ইরফান সেলিমের কক্ষ থেকে লাইসেন্সবিহীন বিদেশি অস্ত্র, একটি একনলা বন্দুক, একটি ব্রিফকেস, মদ ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া দেহরক্ষী মো. জাহিদের কাছ থেকে ৪০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের ৩৮ থেকে ৪০টি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়েছে। যেগুলো আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করে থাকে।

আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘আমরা তাঁদের কাছ থেকে গুলি, হাতকড়া, একটি ড্রোন এবং কন্ট্রোল রুম থেকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি ভেরি হাই সিকিউরিটি সেট (ভিএইচএস) উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এটা ওয়াকিটকির একটি আধুনিক সংস্করণ। এ ছাড়া ওই বাসায় টর্চার সেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। টর্চার সেলে হাড়, ছুরি, হকিস্টিক ও দড়ি পাওয়া যায়।’

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার একই মামলায় ইরফানের সহযোগী আসামি দিপুকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ডিএমপির রমনা গোয়েন্দা বিভাগের একটি দল টাঙ্গাইল থেকে দিপুকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে একই মামলায় মোহাম্মদ ইরফান সেলিমের গাড়িচালক মো. মিজানুর রহমানকে একদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।