রোহিঙ্গানেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে ইউএনএইচসিআরের নিন্দা

Looks like you've blocked notifications!
রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ। ফাইল ছবি

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস-এর চেয়ারম্যান মুহিব্বুল্লাহকে হত্যার ঘটনায় নিন্দা ও উদ্‌বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। ইউএনএইচসিআর-এর কক্সবাজার অফিসের কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান রেজিনা দে লা পোর্টিলার পাঠানো বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী নেতা মহিবুল্লাহর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে গভীরভাবে মর্মাহত ও শোকাহত। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।’

‘আমরা মহিবুল্লাহর পরিবার এবং বৃহত্তর রোহিঙ্গা শরণার্থী সম্প্রদায়ের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি, যারা তার মৃত্যুতে শোকাহত। আমরা অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রতি এই ঘটনার সঠিক তদন্তের এবং দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতের আহ্বান জানাচ্ছি।’

ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, তারা ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ইউএনএইচসিআর ক্যাম্পগুলোতে সংস্থার কর্মীদের উপস্থিতি বাড়িয়েছে, যেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সেবা পায় এবং তাদের যেকোনো উদ্‌বেগের কথা জানাতে পারে। শরণার্থীদের সুনির্দিষ্ট চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে মনোসামাজিক সহায়তাসহ সুরক্ষা ও অন্যান্য পরিষেবা প্রদান করা হচ্ছে। প্রশিক্ষিত পেশাজীবীরা এবং শরণার্থী স্বেচ্ছাসেবীরা শরণার্থীদের জন্য হেল্পলাইনে সার্বক্ষণিক সহায়তা দিচ্ছে।’

ইউএনএইচসিআর বলেছে, ‘সহিংসতা থেকে সুরক্ষা ও নিরাপত্তার খোঁজে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। আমরা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, সুস্থতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ এবং অংশীদারদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।’

গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-১ ইস্ট-এর ব্লক-ডি ৮-এ মুহিবুল্লাহর নিজ অফিসে পাঁচটি গুলি করে। এ সময় তিনটি গুলি তাঁর বুকে লাগে। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। খবর পেয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যেরা তাঁকে উদ্ধার করে ‘এমএসএফ’ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে উখিয়া থানা পুলিশ রাত ১টার দিকে তাঁর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে নিয়ে আসেন।

ময়নাতদন্তের পর মুহিবুল্লাহর মরদেহ গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলে বিকেলেই কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে জানাজার পর তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়। এ সময় সেখানে হাজার হাজার রোহিঙ্গার ঢল নামে।

রোহিঙ্গানেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় উখিয়া থানায় মামলা করা হয়েছে। নিহতের ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এই মামলা করেন। মামলা নম্বর ১২৬। উখিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাউদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।