মেজর সিনহা হত‍্যা মামলা

রোহিঙ্গার কি হত্যাকাণ্ড দেখার চোখ নেই : বাদীপক্ষের আইনজীবী

Looks like you've blocked notifications!
কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে নিহত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ফাইল ছবি

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মুহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় ৫ নম্বর সাক্ষী হাফেজ মোহাম্মদ আমিনের সাক্ষ‍্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টানা সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা করা হয়। দিনব্যাপী কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে হাফেজ মোহাম্মদ আমিনকে নিয়ে এ সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করা হয়। এ নিয়ে এ পর্যন্ত পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত জানান, সিনহা হত্যা মামলার পাঁচ নম্বর সাক্ষী হাফেজ মোহাম্মদ আমিন একজন বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক। ঘটনার সময় এই সাক্ষী মসজিদের ছাদ থেকে হত্যাকাণ্ডের সবকিছু দেখেছেন বলে আদালতকে যে তথ্য দিয়েছেন তা সঠিক নয়। কারণ, তিনি যে মসজিদে চাকরি করেন, সেই মসজিদের পরিচালনা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের নামও জানেন না। সুতরাং তার সাক্ষ্য দেওয়ার আইনগত কোনো অধিকার নেই।

তবে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, রোহিঙ্গা বলে কি তার হত্যাকাণ্ড দেখার কোনো চোখ নেই? তিনি প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশি। তিনি যে মসজিদে চাকরি করেন, সেই মসজিদে কোনো কমিটি নেই। তাই, মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম জানার প্রশ্নই উঠে না।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানান, মামলার পাঁচ নম্বর সাক্ষী আদালতকে যথার্থ বলেছেন। তিনি রোহিঙ্গা নাগরিক নন। তিনি বাংলাদেশি নাগরিক। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য নিজ চোখে দেখেছেন। কারণ, সেদিন মাগরিবের নামাজের পর মসজিদের ছাদে উঠেছিলেন। এ সময় সাক্ষী হাফেজ মোহাম্মদ আমিন হত্যাকাণ্ডের সব ঘটনা দেখেছেন। তাকে রোহিঙ্গা বলার কোনো যুক্তি নেই। এটি মামলাকে ভিন্নখাতে নেওয়ার আসামি পক্ষের কৌশল। তাই, কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।

এদিকে মেজর সিনহা হত্যা মামলার আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে কারাবিধি অনুযায়ী সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার সাক্ষ‍্যগ্রহণের সময় প্রদীপের আইনজীবী রানা দাশ গুপ্তের ডিভিশন চেয়ে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত এ আদেশ দেন।

গত বছরের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মুহাম্মদ রাশেদ খান।