র্যাবের গাড়িতে ডাকাতি করতে গিয়ে আটক ৮ তরুণ
মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়ার উপজেলার চর বাউশিয়া এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) গাড়িতে ডাকাতি করতে গিয়ে আটক হয়েছেন আট তরুণ। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) গভীর রাতে তাঁরা আটক হন বলে র্যাব ১১-এর স্কোয়াড্রন লিডার (উপপরিচালক) এ কে এম মনিরুল আলম সংবাদ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কে এম মনিরুল আলম জানান, গতকাল গভীর রাতে র্যাবের একটি টহল গাড়ি যানজটে আটকা পড়ে। জায়গাটি ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন। সেই সুযোগে সাধারণ যাত্রীবাহী গাড়ি মনে করে ১০ থেকে ১২ জনের একদল ডাকাত সেই গাড়িতে ডাকাতি করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু র্যাব সদস্যরা বিষয়টি বুঝতে পেরে ধাওয়া দিয়ে হাতেনাতে আট যুবককে আটক করেন।
আটক তরুণদের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বলে জানা গেছে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে একটি রামদা, তিনটি চাইনিজ কুড়াল, একটি স্টিলের তৈরি চাপাতি, একটি বড় ছোরা, একটি হাতুরি ও একটি শাবল উদ্ধার করে জব্দ করা হয়েছে।
আটক যুবকরা হলেন মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর গ্রামের সুজন(২০), চর বাউশিয়া বড়কান্দি গ্রামের রাসেল (২৭), চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার মুক্তির কান্দি গ্রামের আলাউদ্দিন(১৯), পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দীঘা গ্রামের বাদশা হোসেন দিপু (২৩), গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের নতুন বসুরচর গ্রামের সাব্বির (১৯), নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার কাইটকারটেক গ্রামের হাবিবুর রহমান (১৯), কুমিল্লার হোমনা উপজেলার মিন্টু (২৩), ঢাকার আলুবাজার এলাকার সিয়াম (১৯)।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার রাতে র্যাব ১১-এর একটি আভিযানিক দল কাঁচপুর থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত যায়। দাউদকান্দি থেকে ফেরার পথে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন চর বাউসিয়া এলাকায় পৌঁছালে র্যাবের গাড়িটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী অন্ধকারাছন্ন জায়গায় যানজটে আটক পড়ে। এ সময়ে সাধারণ যাত্রীবাহী গাড়ি মনে করে ১০ থেকে ১২ জন ডাকাত দেশীয় অস্ত্রসহ ডাকাতির উদ্দেশে সাদা পোশাকে থাকা র্যাব সদস্যদের গাড়িটিকে ঘেরাও করে। তখন র্যাব সদস্যরা গাড়ি থেকে নেমে ধাওয়া করে ডাকাতদলের দল নেতাসহ আট সদস্যকে দেশীয় অস্ত্রসহ হাতেনাতে আটক করেন বাকিরা পালিয়ে যায়। আটককৃতদের থেকে অস্ত্রসহ ডাকাতির বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া গেছে।
এ কে এম মনিরুল আলম সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, আটক ব্যক্তিরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতচক্র এবং তাদের দলের সদস্য সংখ্যা ১২ থেকে ১৫ জন। ডাকাতদলের নেতা সুজন ও তাঁর সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারের যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র ডাকাতি করে আসছিল। গত দুই বছরে তারা এই মহাসড়কে প্রায় ৫০টির অধিক ডাকাতি করেছে বলে স্বীকার করেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতদের গ্রেপ্তারে র্যাব ১১ এর অভিযান চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।
আটক যুবকদের আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানায় হন্তান্তর করা হয়েছে।