লালমনিরহাটে আকস্মিক বন্যায় দিশেহারা হাজারও মানুষ

Looks like you've blocked notifications!
লালমনিরহাটে আকস্মিক বন্যায় হাজারও মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ছবি : এনটিভি

কয়েক দিন আগেও প্রায় শুকিয়ে যাওয়া তিস্তায় গত মঙ্গলবার রাত থেকে হু হু করে আসতে থাকে ভারতীয় ঢল। তিস্তা ব্যারাজ হয়ে সে পানি আছড়ে পড়তে শুরু করে নদী-তীরবর্তী এলাকাগুলোতে। নদীর পানি প্রবাহিত শুরু করে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে। সৃষ্টি হয় আকস্মিক বন্যা।

এদিকে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানির তোড়ে কালীগঞ্জ-রংপুর সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গতকাল বুধবার রাত থেকে এ পথে বন্ধ রয়েছে সড়ক যোগাযোগ। পানি ওঠায় বন্ধ হয়ে পড়েছে বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বুধবার সকাল থেকে হাতীবান্ধা ও পাটগ্রামে বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।

ভারতে টানা বর্ষণে গজলডোবা বাঁধের গেট খুলে দেওয়ায় পানির ঢল মঙ্গলবার থেকে ধেয়ে আসছে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজের দিকে। ফলে ব্যারেজের ৪৪টি স্লুইচ গেটের সবগুলো খুলে রেখেও পানির চাপ কমানো যায়নি। ভেঙে গেছে ফ্লাড বাইপাস। ফলে বুধবার থেকে লালমনিরহাটের বড়খাতা হয়ে তিস্তা ব্যারাজের ওপর দিয়ে নীলফামারীর সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে।

এদিকে তিস্তা ব্যারাজের ভাটিতে থাকা হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকার অন্তত অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যারাজের উজানে থাকা পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়নের তিস্তা তীরের বেশ কয়েকটি গ্রাম। রাতারাতি সৃষ্ট আকস্মিক এ বন্যার কবলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন হাজারও মানুষ।

কোনো কিছু টের পাওয়ার আগেই জেলার পাঁচ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের পানিবন্দি এসব মানুষের অনেকেই পরিবার-স্বজন ও গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন স্থানে। তাদের কেউ কেউ পড়েছেন খাবারের কষ্টে। বিভিন্ন এলাকার বেশকিছু রাস্তাঘাট ও ব্রিজ-কালভার্ট পানির তোড়ে ভেঙে গেছে।

গতকাল বুধবার রাতে কালীগঞ্জ থেকে শেখ হাসিনা গঙ্গাচড়া সেতু হয়ে রংপুরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকারী সড়কের কিছু অংশ ধসে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। উঠতি আমন ধানসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা।

বন্যার পানি উঠেছে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়ে পানিবন্দি মানুষকে ত্রাণ সহায়তা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর।