শবে বরাতে স্ত্রীকে হত্যা করে মসজিদে গেলেন স্বামী!
দাম্পত্য কলহের জেরে জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে গত মঙ্গলবার দিনগত রাতে (শবে বরাতে) গৃহবধূ পান্না বেগমেকে জবাই করে হত্যার পর মসজিদে নামাজ পড়তে যান স্বামী সিরাজুল ইসলাম। গতকাল বুধবার (৮ মার্চ) পান্না বেগম হত্যা মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ নূরে আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত মঙ্গলবার (৭ মার্চ) রাত ১০টার দিকে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের গুডুম্বা পূর্বপাড়া গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত গৃহবধূ পান্না বেগমের বাড়ি বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলার ঘোড়াদহ মধ্যপাড়া গ্রামে।
এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ নূরে আলম বলেন, ‘প্রায় ১৩ বছর আগে পান্না বেগমের সঙ্গে সিরাজুল ইসলামের বিয়ে হয়। কিন্তু এখনও তাদের সন্তান হয়নি। এ কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। মঙ্গলবার বিকেল থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কয়েক দফা কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে মঙ্গলবার রাতে স্বামী সিরাজুল ইসলাম তার স্ত্রী পান্না বেগমকে ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যা করেন। এরপর দুর্বৃত্তরা তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে বলে নাটক সাজাতে স্ত্রীর মরদেহ ঘরে ফেলে রেখে মসজিদে শবে বরাতের নামাজ পড়তে চলে যান তিনি।’
‘ঘণ্টাখানেক পরে মসজিদ থেকে ফিরে স্ত্রীর মরদেহ নিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন সিরাজুল। তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন এবং পুলিশকে খবর দেন। এরপর পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়’, যোগ করেন পুলিশ সুপার।
এসপি নূরে আলম আরও বলেন, ‘পরে সন্দেহভাজন পান্না বেগমের স্বামী সিরাজুল ইসলাম, ভাসুর আসাদুল ইসলাম, ভাবি সাগিরা বেগম ও প্রতিবেশী মাসুদ রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আক্কেলপুর থানায় নেওয়া হয়। এরপর এ ঘটনায় নিহত পান্না বেগমের বাবা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে আক্কেলপুর থানায় মামলা করেন।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার আগেই পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সিরাজুল ইসলাম তার স্ত্রীকে জবাই করে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এরপর স্বেচ্ছায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সিরাজুল। এরপর আদালতের নির্দেশে তাকে জয়পুরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।’