‘শাহজালালের মাজারে হামলার পরিকল্পনা করেছিল নব্য জেএমবি’
শোকের মাস আগস্টকে কেন্দ্র করে এবং আইএসের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সিলেটের হজরত শাহজালালের (রহ.) মাজারে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল আটক হওয়া নব্য জেএমবির পাঁচ সদস্য। এমন মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
আজ বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান এই মন্তব্য করেন।
আটকদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আটক পাঁচজন নব্য জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য। তারা কথিত আইএসের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ঈদুল আজহার পূর্বে বিভিন্ন স্থানে হামলার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এর অংশ হিসেবে তারা গত ২৩ জুলাই সিলেটের হজরত শাহজালালের (রহ.) মাজার শরিফে হামলার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। কিন্তু সিলেটে পুলিশের কড়া নজরদারির কারণে তারা ব্যর্থ হয়।’
সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘জেএমবির শূরা সদস্য শেখ সুলতান মোহাম্মদ নাইমুজ্জামানের নেতৃত্বে তারা সিলেটের শাপলাবাগের একটি বাসায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণের আড়ালে সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। এর আগে আটকরা গত ২৪ জুলাই ঢাকার পল্টনের পুলিশ চেকপোস্টের পাশে ও ৩১ জুলাই নওগাঁ জেলার সাপাহার এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মন্দিরে বোমা হামলা করতে সক্ষম হয়।’
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘শেখ সুলতান মোহাম্মদ নাইমুজ্জামান কফি মেকার হিসেবে কাজ করেন। তিনি ২০১৯ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স সম্পন্ন করে। তিনি ছাত্রজীবনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তিনি সামরিক শাখার প্রধান প্রশিক্ষক। সামরিক প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে সিলেটের শাপলাবাগে বাসাটি ভাড়া নেন। সানাউল ইসলাম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী। রুবেল আহম্মেদ ২০১৬ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধন ব্লু বার্ড সিলেট শাখা থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেন। তিনি সিলেটের টুকেরবাজারে সার, বীজ ও কীটনাশকের ব্যবসা করেন। আবদুর রহিম জুয়েল রেন্ট-এ-কারের চালক হিসেবে কাজ করতেন। মূলত তাঁর গাড়ি ব্যবহার করেই তাঁরা সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করছিলেন। সায়েম মির্জা সিলেটের মদন মোহন কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনিও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সক্রিয় সদস্য ছিলেন।’
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার নব্য জেএমবির পাঁচজনকে সিলেট থেকে আটক করে সিটিটিসির একটি টিম। বিষয়টি জানিয়েছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) জনসংযোগ শাখার উপকমিশনার (ডিসি) মো. ওয়ালিদ হোসেন।
ওয়ালিদ হোসেন বলেন, ‘ওই টিম ইতোমধ্যে আটকদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’