শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে সেই অধ্যক্ষের রিট

Looks like you've blocked notifications!
গাজীপুরে সরকারের নির্দেশ অমান্য করে পরীক্ষা নেওয়ার দায়ে কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া অধ্যক্ষ আব্দুল কাইয়ুম সরকার। ছবিটি গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর তোলা। ছবি : এনটিভি

কোনো বিলম্ব ছাড়াই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত এক রিট করেন গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুল কাইয়ুম সরকার।

রিটের বিষয়টি নিশ্চিত করে তাঁর আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী বলেন, বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের বেঞ্চে এ রিটের শুনানি হতে হবে।

শিক্ষা সচিব, শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, উপসচিব, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট ছয়জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

এর আগে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৬ জানুয়ারির মধ্যে খুলে দিতে সরকারের শিক্ষা সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আইনি (লিগ্যাল) নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সরকারের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়।

ভাওয়াল মির্জাপুর পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল কাইয়ুম সরকারের পক্ষে গত ১১ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী ওই আইনি নোটিশ পাঠান। নোটিশে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ছাড়াও শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) বিবাদী করা হয়।

নোটিশে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে গেল বছরের মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ পর্যন্ত ১১ বার বন্ধের নোটিশ দিয়েছে সরকার। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা এ সময়ে বাইরে ঘোরাঘুরি করছে, টিভি দেখে সময় ব্যয় করছে। এ ছাড়া মোবাইল ব্যবহার করে খারাপ অভ্যাস হয়ে যাচ্ছে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় সে ছুটি আরো বাড়ানো হয়। সরকারের এই নির্দেশনা অমান্য করে ভাওয়াল মির্জাপুর পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল কাইয়ুম সরকার গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে ডেকে এনে পরীক্ষা নেন। এ অপরাধে তাঁকে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গাজীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল জাকীর পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে অধ্যক্ষকে কারাগারে পাঠানো হয়।

১৪ ডিসেম্বর গাজীপুর সদর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু ওবায়দা আলী সাংবাদিকদের জানান, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশে দেশের সব স্কুল-কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। তা ছাড়া শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে স্কুল-কলেজ এমনিতেই বন্ধ। অথচ সরকারি এসব নির্দেশ অমান্য করে সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ সকালে স্কুলের প্রধান গেট বন্ধ করে পেছনের গেট দিয়ে বিভিন্ন ক্লাসের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নিচ্ছিল। এ অভিযোগ পেয়ে দুপুরে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় এবং পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও খাতা জব্দ করা হয়। অভিযানকালে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ওই ঘটনার পরে অধ্যক্ষ আব্দুল কাইয়ুম সরকার ১১ জানুয়ারি প্রথমে আইনি নোটিশ পাঠান এবং আজ হাইকোর্টে রিট করেন।