শিবচরে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, স্বামী পলাতক
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের শেখপুর গ্রামে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সাথী বেগম (২৭) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর থেকেই পলাতক রয়েছেন তাঁর স্বামী মামুন চৌকিদার। পরিবারের দাবি, সাথীকে হত্যা করে লাশ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
সাথী বেগম বাঁশকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ বাঁশকান্দি গ্রামের আছুমদ্দিন কবিরাজের মেয়ে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ থেকে ১১ বছর আগে মামুনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে সাথীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সাথীর সঙ্গে মামুনের বিভিন্ন সময় মনোমালিন্য দেখা যায়। মাঝে মধ্যে সাথীকে তাঁর বাবার বাড়ি থেকে টাকা-পয়সা নেওয়ার জন্যেও চাপ দেওয়া হতো। সাথী তাঁর ভাইদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা না নেওয়ার কারণে তাঁকে বেশ কয়েকবার মারধর করা হয়। এর আগে তাঁদের মধ্যে পারিবারিক কলহ হলে স্থানীয় সালিশির মাধ্যমে সমাধান করা হয়।
গত কয়েকদিন ধরে সাথীকে আবার টাকা-পয়সার জন্য মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যেই আজ সকালে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় সাথীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। মনির নামের এক প্রতিবেশী মামুনকে বাজারে যাওয়ার জন্য ডাকতে এসে সাথীকে ঘরের মধ্যে ঝুলে থাকতে দেখেন। পরে তিনি লোকজনদের খবর দিলে শিবচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
সাথীর পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের দাবি, সাথীর স্বামী তাঁকে হত্যা করে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছেন।
সাথীর ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার বোনকে প্রায়ই টাকা-পয়সার জন্য চাপ দেওয়া হতো। মাঝে মধ্যে অনেক মারধর করা হতো। এ নিয়ে কয়েকবার সালিশ বৈঠকও হয়। কয়েকদিন আগে সাথীকে মারধর করা হলে আমরা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ (ফমেক) হাসপাতালে ৩৬ হাজার টাকা ব্যয়ে চিকিৎসা করাই। আজ আমার বোনকে মেরে ঘরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’
শিবচর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমির হোসেন সেরনিয়াবাত জানান, এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা—কিছু বোঝা যাচ্ছে না। আমরা ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছি। ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে লাশটি পাঠানো হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পর ঘটনা সম্পর্কে বোঝা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন।