শিশুর গায়ে ছ্যাঁকা দিয়ে মরিচ দিলেন নার্স!
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি বাসায় কাজ করত ১০ বছর বয়সী মালা। বাসায় আনা একটি মুরগি হারিয়ে যাওয়ায় মালার হাত বেঁধে, মুখে স্কচটেপ দিয়ে পশ্চাৎদেশে ও পায়ে গরম খুন্তির ছ্যাঁক দেন গৃহকর্ত্রী। এতেই ক্ষান্ত হননি ওই গৃহকর্ত্রী। ছ্যাঁক দেওয়া জায়গায় মরিচের গুঁড়া দিয়ে দেন তিনি।
গৃহকর্ত্রী দিলারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নার্স। গতকাল শুক্রবার মালা যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালীর ওই বাসা থেকে পালিয়ে দনিয়ায় তাঁরই এক স্বজনের বাসায় আশ্রয় নেন, পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটেই ভর্তি করা হয়। তবে গতকালের পর থেকে দিলারা নামের ওই নার্স পলাতক। মালার খালার দায়ের করা মামলায় দিলারার স্বামী রাজীবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জানা যায়, মালা পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার হাজিরা গ্রামের জেলে পরিবারের সন্তান। তার বাবার নাম রমিজ মিয়া ও মা কল্পনা আক্তার। দুই হাজার টাকা বেতনে দুই বছর ধরে রাজীব ও দিলারার বাসায় কাজ করছে মালা।
মালা জানায়, দিলারার ছোট দুটি ছেলে রয়েছে। তাদেরই দেখাশুনা করত সে। আর রাজীব মাছের আড়তে ব্যবসা করে।
ছোটখাটো ভুল হলেই দিলারা মালাকে মারধর করত, চড়-থাপ্পর দিত, এমনকি লাঠি দিয়ে আঘাত করত। কয়েকদিন আগে দিলারার বাবা দুটি দেশি মুরগি বাসায় নেন। সেখান থেকে একটি মুরগি হারিয়ে যায়। এই ‘অপরাধে’ মালাকে একটি রুমে নিয়ে দুই হাত শক্ত করে বেঁধে, মুখে স্কচটেপ দেয়। তারপর খুন্তি দিয়ে শরীরের একাধিক জায়গায় ছ্যাঁক দেয়। এরপর ওই জায়গায় মরিচের গুঁড়া দিয়ে দেয়।
নির্যাতনের শিকার মালা গতকাল শুক্রবার দনিয়ায় নিজের এক কাকার বাসায় চলে যায়। পরে তাঁরা যাত্রাবাড়ী থানায় বিষয়টি জানিয়ে মালাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
শিশুটির খালা সুমা আক্তার জানান, তিনি ডেমরা কোনাপাড়ায় থাকেন। মালার মা শুক্রবার বিকেলে তাঁকে ফোন দিয়ে জানায় মালাকে দিলারা ও রাজীব খুঁজে পাচ্ছেন না।
এদিকে হাসপাতালে মালা জানিয়েছে, রাজীব তাকে কোনো মারধর করত না। বরং রাজীব যেন এসব বিষয় না জানে সে ব্যাপারে তাকে সাবধান করেছিল দিলারা।
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, শিশুটির খালা সুমা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করার পর গৃহকর্তা রাজীবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে গৃহকর্ত্রী দিলারাকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।