শেরপুরের পানিহাতায় বন্যহাতির আক্রমণে বিপর্যস্ত মানুষ
প্রতিদিনই বন্যহাতির পাল নেমে আসছে লোকালয়ে। ধ্বংস করছে বাড়িঘর, খেয়ে সাবার করছে ফসলের ক্ষেত। বিনষ্ট হচ্ছে ফল ও সবজির বাগান। এক সপ্তাহ ধরে বারবার আক্রান্ত হচ্ছে শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার গারোপাহাড়ের কোলে অবস্থিত পানিহাতা জনপদটি।
এই জনপদের দিনমজুর হাসমতের বাড়িটি গত এক সপ্তাহে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হয়েছে হাতির পাল দ্বারা। প্রথম দফায় কোনোমতে বসতঘরটি রক্ষা পেয়েছিল। দ্বিতীয় দফার আক্রমণে পুরো বসতবাড়িটি ধ্বংস হয়ে গেছে। বাড়ির আঙিনার গাছপালা হয়েছে সব বিধ্বস্ত।
হাসমত জানান, হাতির পালটি তার ঘরের টিনের বেড়া ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করলে তারা কোনো রকমে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। ঘরের ভেতর প্রবেশ করার পর হাতির পাল ঘরটি ভেঙেচুরে বিধ্বস্ত করে ফেলে। ফলে সপ্তাহ ধরেই তারা খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন।
হাসমত আরও জানান, তিনি কষ্ট করে চৌচালা টিনের ঘরটি দিয়েছিলেন। হাতির পাল ঘরটি ধ্বংস করে দেওয়ায় এখন তিনি আশ্রয়হীন।
পানিহাতা এলাকার বিস্তীর্ণ জমির ধান নষ্ট করেছে হাতির পাল। হাতির পায়ের নিচে পিষে গেছে একরের পর একর জমির ধান। এ এলকার কৃষকরা ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বন্যহাতির পালের তাণ্ডবে।
এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, রাতের বেলাই শুধু নয়, অনেক সময় দিনেও আক্রমণ চালায় হাতির পাল। তাদের আবাদের ধান, ফল ও সবজির বাগান সব বিনষ্ট করেছে হাতির পাল। অনেকে কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এদিকে হাতি রক্ষার জন্য যারা মানববন্ধন করছেন, তাদের প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। বলেন, মানুষ মরছে। জান-মাল হারাচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষ, তা নিয়ে তাদের কোনো আক্ষেপ নেই, তারা আছে হাতি রক্ষা নিয়ে।
উল্লেখ্য, এক যুগ ধরে শেরপুর জেলার গারোপাহাড় অধ্যুষিত ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদী উপজেলার ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন জনপদগুলো হাতির তাণ্ডবে মৃত্যু ও ধ্বংসপুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ মানুষের জানমাল রক্ষায় তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি প্রশাসনের তরফ থেকে।