শেষ সময়ে বাড়তি ঝুঁকি নিয়ে বাড়ির পথে যাত্রীরা

Looks like you've blocked notifications!
দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় শেষ সময়ে বাড়তি ঝুঁকি নিয়ে বাড়ির পথ ধরেছে অসংখ্য মানুষ। ছবি : এনটিভি

দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় শেষ সময়ে অনেক বেশি ঝুঁকি নিয়ে বাড়ির পথ ধরেছে অসংখ্য মানুষ। এরই মধ্যে খবর এলো মোটরসাইকেলে করে কুষ্টিয়ার উদ্দেশে যাওয়ার পথে সাভারের আমিন বাজার ব্রিজে ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন আফরিন নামের এক তরুণী। তিনি রাজধানীর একটি স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন।

তাতে থেমে নেই দূরের যাত্রা। পরিবহণ সংকটে পায়ে হেঁটে, বৃষ্টিতে ভিজে একের পর এক যানবাহন বদলে, বাড়তি ভাড়া গুণে এবং যানজটে নাকাল হয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে ছুটে চলেছেন হাজারও মানুষ।

সব মিলিয়ে পথে পথে দুর্ভোগ। অসংখ্য মানুষের ভিড়ে লরি, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপে চড়ে গন্তব্যে রওনা হওয়া নারী ও শিশুদের দুর্দশার চিত্র এখন পথে পথে।

গাবতলী থেকে আমিনবাজারে পায়ে-হাঁটা অসংখ্য মানুষের চিত্র দেখে মনে হবে, যেন তারা ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে।

এদিকে, আজ ভোরে গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে সুনসান নীরবতা। রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে বাসের জন্য এই টার্মিনালে আসা যাত্রীরা পায়ে হেঁটে রওনা করেছেন দেড় কিলোমিটার দূরে আমিন বাজারের উদ্দেশে।

কারও হাতে ব্যাগ, কারও কোলে সন্তান। অসংখ্য মানুষের ঢল নেমেছে আমিনবাজারে। সেখানে তৈরি হয়েছে তীব্র যানজটের।

সোহরাব হোসেন ও সাবিনা আক্তার নামের এক দম্পতি এমন পরিস্থিতির মুখে পড়ে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলছিলন, ‘এ কেমন ব্যবস্থাপনা! যাত্রাবাড়ী থেকে এত কষ্ট করে গাবতলী এসেছি। তারপর পায়ে হেঁটে আমিনবাজার। এখান থেকে গাড়ি মিলছে। তাহলে গাবতলী থেকে গাড়ি চালাতে সমস্যা কোথায়?’

এদিকে, আমিনবাজারে ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম ছাড়া পুলিশের অন্য কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি।

যে যেভাবেই পারছে সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে দূরপাল্লার বাস বন্ধ রাখার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন দূর্ভোগে থাকা অসংখ্য মানুষ।

সাভার-আশুলিয়ার সব তৈরিপোশাক ও শিল্প কারখানা সাত থেকে ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করায় মহাসড়কগুলোতে এখন ঘরমুখো শ্রমিকদের উপচেপড়া ভিড়।

দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ঘরমুখী এসব মানুষ প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স, মোটরসাইকেল ও পণ্য পরিবহণের গাড়িতে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।

সাভারে ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ পরিদর্শক আবদুস সালাম জানান, ঘরমুখো মানুষদের কেউই মানছেন না কোনো বিধিনিষেধ। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে যে যার মতো করে ছুটছেন গ্রামের পথে।

 

এদিকে, পরিবহণ সংকটের সঙ্গে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপে ট্রাকে কিংবা লোকাল বাসে দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।

ভেঙে ভেঙে বাড়ির পথ ধরে যাত্রীদের যেমন হাজারও দুর্ভোগের মুখে পড়তে হচ্ছে তেমনি গুণতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ।

আর, সব মিলিয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল, তাও ভেস্তে যেতে বসেছে।