শেষ হলো ৮ গ্রামের লোকের হোম কোয়ারেন্টিন, মেলেনি করোনার উপসর্গ

Looks like you've blocked notifications!
চলমান লকডাউনের মধ্যেই গত ১৮ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় যোগ দেয় লাখো মানুষ। ছবি : এনটিভি

লকডাউনের মধ্যেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষের অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে তিন উপজেলার আটটি গ্রামের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ হোম কোয়ারেন্টিনে ছিল। লকডাউন কড়াকড়িতে সেখানে বন্ধ রয়েছিল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট। গ্রামগুলোর প্রবেশপথে লাল নিশান উড়িয়ে ব্যারিকেড দিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছিলেন।

 

১৪ দিনের সেই হোম কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ আজ  শনিবার সন্ধ্যায় শেষ হয়। তবে এর মধ্যে সেখানে করোনাভাইরাস বা এর উপসর্গযুক্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি বলে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ নিশ্চিত করেছে।

গত ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মার্কাসপাড়ার নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মাওলানা জুবায়ের আহমেদ আনসারী। ওইদিন রাতেই তাঁর মৃত্যুর খবর বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যায় ও ফেসবুকে প্রচার করা হয়। পরের দিন ১৮ এপ্রিল সকালে বেড়তলা গ্রামের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা মাঠে তাঁর জানাজায় লাখো মানুষের ঢল নামে। এ নিয়ে দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়।

জানা যায়, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় ওই দিনই জেলার তিন উপজেলার আটটি গ্রামের বাসিন্দাদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসন। গ্রামগুলো হলো আশুগঞ্জ উপজেলার খড়িয়ালা, বৈগইর ও মৈশাইর, সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের শান্তিনগর, সীতাহরণ, বড়ইবাড়ি ও বেড়তলা এবং সদর উপজেলার মালিহাতা গ্রাম। এসব গ্রামের কেউ ১৪ দিন বাড়ি থেকে বের হলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেয়।

কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারীর পাশাপাশি প্রতিটি গ্রামের জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন করে দেয়। তারা কোয়ারেন্টিনে থাকা লোকজনের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনাকাটা শেষে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়।

এই বিষয়ে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এস এম মোসা এনটিভি অনলাইনকে জানান, গ্রামগুলোতে এখন পর্যন্ত করোনার উপসর্গ থাকা কোনো ব্যক্তি পাওয়া যায়নি। শনিবার সন্ধ্যায় তাদের হোম কোয়ারেন্টিন শেষে গ্রামগুলোর প্রবেশপথগুলোতে থাকা পুলিশি পাহাড়া উঠিয়ে নেওয়া হয়।

এই বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মো. একরাম উল্লাহ এনটিভি অনলাইনকে জানান,এখন পর্যন্ত ওই আট গ্রামের কারো মধ্যে করোনাভাইরাসের উপসর্গ পাওয়া যায়নি। 

জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দোলা খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ১৪ দিন তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। এখন পর্যন্ত গ্রামগুলোতে কোনো মানুষের করোনার উপসর্গ পাওয়া যায়নি। এরপরও অধিক সতর্কতার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের মাধ্যমে এসব গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক আমাদের কাছে এই বিষয়ে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।