শোক দিবসের অনুষ্ঠানে যাওয়া হলো না ছাত্রলীগ নেতার

Looks like you've blocked notifications!
ঝালকাঠিতে সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা সুমন হালদারের (ইনসেটে) মৃত্যুর খবর পেয়ে সদর হাসপাতালে স্বজনদের আহাজারি। ছবি : এনটিভি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি ছিল অগাধ ভালোবাসা। পড়ালেখার পাশাপাশি তাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন সুমন হালদার (২৫)। ইচ্ছে ছিল ঝালকাঠি সদর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে একটি ভালো পদে যুক্ত থাকা। কিন্তু তাঁর সেই ইচ্ছে পূরণ হলো না।

ঝালকাঠিতে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলার নেহালপুর এলাকায় অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত সুমন হালদার সদর উপজেলার কীর্ত্তিপাশা ইউনিয়নের খোর্দ্দবরহার গ্রামের সুভাষ হালদারের ছেলে। তিনি বরিশাল বিএম কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পড়তেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুরে ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোক দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গ্রামের বাড়ি থেকে ভাড়ায়চালিত একটি মোটরসাইকেলে চড়ে শহরে আসছিলেন সুমন হালদার। নেহালপুর ব্রিজের ওপরে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষে মোটরসাইকেলের চালকসহ তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমন হালদারকে মৃত ঘোষণা করেন। মোটরসাইকেলচালক মো. মান্না (৩০) গুরুতর আহত হয়ে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এদিকে সুমনের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন স্বজনরা। তাদের কান্নায় হাসপাতাল এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে যায়। লাশের পাশে বাবা-মায়ের বিলাপ দেখে চোখে পানি ধরে রাখতে পারেননি সুমনের রাজনৈতিক সহকর্মীরা। হাসপাতালে ছুটে আসেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আল আমিন। সুমন হালদার ঝালকাঠি সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন।

সুমনের বাবা সুভাষ হালদার বলেন, আমার ছেলে বঙ্গবন্ধুপ্রেমী ছিল। সে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন সময় আন্দোলন করেছে। বিএম কলেজে পড়ার পাশাপাশি তাঁর ইচ্ছে ছিল ছাত্রলীগের সদর উপজেলা কমিটির একটি পদে যাওয়ার। এ জন্য ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সব ধরনের অনুষ্ঠানে সে গ্রাম থেকে শহরে যেত। শোক দিবসের অনুষ্ঠানের কথা শুনে বাড়িতে আর মন বসেনি সুমনের। মোটরসাইকেল ভাড়া করে সে অনুষ্ঠানের জন্য রওনা হয়। আমার বাবার আর অনুষ্ঠানে যাওয়া হয়নি।

ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, সুমন একজন মেধাবী ছাত্রনেতা। তাঁকে আমরা সদর উপজেলার কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে আনার চিন্তা করেছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে তাঁর এই মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমাদের নেতা আমির হোসেন আমু এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁর পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে।

ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, পুলিশ অটোরিকশাটি আটক করলেও চালক পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।