সংলাপের নামে রাষ্ট্রপতি হকারি করছেন : রিজভী

Looks like you've blocked notifications!
জাতীয় প্রেসক্লা‌বের সাম‌নে বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন রুহুল কবির রিজভী। ছবি : এনটিভি

সংলা‌পের না‌মে রাষ্ট্রপ‌তি হকা‌রি কর‌ছেন ব‌লে মন্তব‌্য ক‌রে‌ছেন বিএন‌পির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাস‌চিব অ্যাডভোকেট রুহুল ক‌বির রিজভী আহমেদ।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লা‌বের সাম‌নে বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে বাংলা‌দেশ ফেডা‌রেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবা‌দিক ইউনিয়‌ন (ডিইউজে) আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে রিজভী আহমেদ এ মন্তব্য ব‌লেন।

রিজভী ব‌লেন, শেখ হা‌সিনা দে‌শের জনগণের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য, জনগণের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য, কত তামাশা করছেন। রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে তিনি সংলাপও ডাকাচ্ছেন। আর সংলাপের নামে রাষ্ট্রপতি হকারি করছেন। ট্রেনে যেমন হকাররা বড়ি বিক্রি করতে মজার গল্প বলত মানুষ আকর্ষণ বোধ করত। এই রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন সেই ধরনের হকার।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ আর করোনার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। করোনা যেমন রূপান্তর হচ্ছে আওয়ামী লীগও নিজে নিজে রূপান্তর ঘটায়। করোনা মানুষের জীবন কেড়ে নেয়, আওয়ামী লীগও মানুষের জীবন কেড়ে নেয়। আজকে বাংলাদেশের জীবন কাড়ার এক রাষ্ট্র ব্যবস্থা করেছে এই নব্য বাকশালী আওয়ামী লীগ। তারা চেষ্টা করছে, বাংলাদেশ থেকে বিরোধী কণ্ঠস্বরকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করার জন্য। বাংলাদেশের সবচাইতে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিনা কারণে কারাগারে আটকে রেখেছে। খালেদা জিয়ার যে মামলার কোনো সত্যতা নেই, কোনো প্রমাণ নেই, কোনোভাবে প্রমাণ করতে পারেননি, শেখ হাসিনা শুধু গায়ের জোরে বন্দি করে বিনা চিকিৎসায় তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আলটিমেটলি যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক ইচ্ছের প্রতিফলন ঘটবে। তারা একটা তামাশা করে যাচ্ছে। হকারের সেই চমকপ্রদ কাহিনী ফাঁদতে চেষ্টা করছেন রাষ্ট্রপতি। ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার এবং চিরদিন টিকে থাকার জন্য যা কিছু করার তিনি সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছেন। সেইটা আর হবে না। বাংলাদেশের মানুষ তো জানেই আস্তে আস্তে বিশ্বের কাছে সরকারের বোরখা খুলতে শুরু করেছে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলব, আপনার সরকারের সেই বোরখা সম্পূর্ণ খোলার আগে পদত্যাগ করুন। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, তাকে সুচিকিৎসার সুযোগ দিন। রুহুল আমিন গাজীকে মুক্তি দিন। তা না হলে যখন সব কিছু উন্মোচন হয়ে যাবে, তখন পালিয়েও নিজের মুখ আর ঢাকতে পারবেন না।

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, হাইকোর্টের বিচার নিয়ে অনেকেই বলেন, বিচার তো হবেই। কিন্তু কীভাবে ন্যায় বিচার হবে? কয়েক দিন আগে ১৯ জনকে টপকে আপিল ডিভিশনে বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কারণ তাদের বিশ্বস্ত লোক হাইকোর্টে দরকার। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক ইচ্ছের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। এই কারণে এ ধরনের বেআইনি কাজ তারা করছে।

এই সরকার সাংবাদিক সুরক্ষার নামে আরেকটি কালাকানুন তৈরি করছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, কেন এই সরকার এত কালাকানুন তৈরি করছে? একজন আইন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, প্রতিটি কালাকানুন দেশবাসীর জন্য এক একটা অমঙ্গলকারী আইন। এই কালাকানুন তৈরি করা হলে আরেকটি নিকৃষ্ট অত্যাচার সাংবাদিকদের উপর নেমে আসবে। আর এই কারণে তারা আরেকটি ব্ল্যাক ল তৈরি করতে চায়।

বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএফইউজের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বর্তমান মহাসচিব নুরুর আমিন রোকন, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, সহ-সভাপতি শাহীন হাসনাত, বাছির জামাল ও রাশেদুল হক, বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ খায়রুল বাশার, সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবু ইউসুফ, ডিইউজের দপ্তর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য আব্দুস সেলিম, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম ও প্রচার সম্পাদক খন্দকার আলমগীর হোসাইন।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি মোরসালিন নোমানী, বিএফইউজের দপ্তর সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ, নির্বাহী সদস্য এ কে এম মহসিন ও জাকির হোসেন, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান সাজু, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক (গাজী আনোয়ার), জনকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান মাসুদা সুলতানা, নির্বাহী সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম, জেসমিন জুঁই, আব্দুল হালিম, বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতা ও গণমধ্যমকর্মীরা।