সওজের বাধায় বন্ধ প্রকল্প, বিশুদ্ধ পানির দুর্ভোগে ভৈরববাসী

Looks like you've blocked notifications!
বিশুদ্ধ পানির জন্য দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে ভৈরব পৌরবাসী। ছবি : এনটিভি

নরসিংদীর সড়ক ও জনপথের (সওজ) বাধায় দুর্ভোগে পড়েছেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌরসভার মানুষ। পানি বিশুদ্ধকরণ প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষে মেঘনা নদীর পানি আনতে পাম্পের জন্য পন্টুন বসাতে গেলে বাধ সাধে সওজ। তাতেই ঘটে বিপত্তি। বন্ধ হয়ে যায় প্রকল্পের কাজ। ফলে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার শুরু হয় ভৈরবজুড়ে। এরপর দশ মাস পেরিয়ে গেলেও কোনও সমাধান হয়নি।

যদিও সমস্যা সমাধানে সড়ক ও জনপথকে চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং দ্রুতই সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানিয়েছে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। অপরদিকে ‘আমলাতান্ত্রিক জটিলতা’র অবসান চেয়েছেন পৌর কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, ভৈরববাসীর বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার দীর্ঘদিনের। সুপেয় পানির জন্য দূরে যেতে হয় বাসিন্দাদের। তাদের দুর্ভোগের কথা ভেবে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর চার কোটি ৩৮ লাখ ৯২ হাজার টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়। গত বছরের ৩০ জুনের মধ্যে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল।

জানা গেছে, পানি বিশুদ্ধকরণ প্রকল্পের ৯৫ ভাগ কাজ শেষে ভৈরবের মেঘনা নদীর তীরে পানি সরবরাহ পাম্পের জন্য পন্টুন বসাতে গেলে বাধা দেয় নরসিংদী সড়ক ও জনপথ বিভাগ। গত বছরের এপ্রিল মাসে এ ঘটনা ঘটে। যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়ে ভৈরববাসী।

ভৈরব পৌরসভার এক অধিবাসী এনটিভিকে বলেন, ‘পানির কষ্টে মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পানি আনতে হয়। সেই পানিও ব্যবহার করা যায় না। তারপরও কাজ চালিয়ে নিতে হচ্ছে।’

পৌর এলাকার কয়েকজন গৃহিণী এনটিভিকে বলেন, ‘আজ এক বছর ধরে পানি নেই। এ জন্য নদীনালা ও বিল থেকে পানি আনতে হয়। আবার সে পানিও ব্যবহার করা যায় না। ব্যবহার করলে হাতে ফোসকা পড়ে যায়। মাথার চুল নষ্ট হয়ে যায়। তারপরও বাধ্য হয়ে আমাদের সে পানি ব্যবহার করতে হয়।’

দ্রুত এ সব সমস্যার সমাধান করে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইউনুছ অ্যান্ড ব্রাদার্সের সত্ত্বাধিকারী মো. মজিবুর রহমান বলেন, ‘ভৈরবের মেঘনা নদীতে পন্টুন বসাতে গেলে কেপিআইভুক্ত এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করে সড়ক ও জনপথ কাজে বাধা দেয় নরসিংদী সড়ক ও জনপথ বিভাগ। তাঁরা অনুমতি নিয়ে কাজ করার জন্য বলেন।’

‌অপরদিকে ‘সমস্যা সমাধানের জন্য সড়ক ও জনপথকে চিঠি দেওয়া হয়েছে’ উল্লেখ করে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাসুদ রেজা এনটিভিকে বলেন, ‌‘কাজ শেষ করতে পারলে ভৈরব পৌরসভায় পানির সংকট নিরসন সম্ভব হতো।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভৈরব পৌর মেয়র ইফতেখার হোসেন বেনু এনটিভিকে বলেন, ‘বিষয়টি দুঃখজনক। আমি চাই- দ্রুততার সঙ্গে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার অবসান ঘটিয়ে ভৈরববাসীর পানি সমস্যার সমাধান হোক।’

অপরদিকে নরসিংদী সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মোফাজ্জল হায়দার এনটিভিকে বলেন, ‘অনুমোদন নিতে হলে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কাজটি করতে হবে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর পৌরসভার মাধ্যমে ওই অনুমোদন যত দ্রুত নিয়ে কাজটি করতে পারবে, ততই ভালো।