সকালে জামিন নামঞ্জুর, দুপুরে বিক্ষোভ, বিচারক বদলি, বিকেলে জামিন

Looks like you've blocked notifications!
( আওয়াল ও তার স্ত্রীর ছবি ) ছবি : সংগৃহীত

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় পিরোজপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল ও তাঁর স্ত্রী লায়লা পারভীনের জামিন সকালে খারিজের পর বিকেলে ফের জামিন পেয়েছেন।  

আজ মঙ্গলবার সকালে পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুল মান্নানের আদালত আউয়াল-দম্পতির করা জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অন্য একটি আদালত থেকে জামিন পান তাঁরা। 

সকালে জামিন আবেদন নাকচের আদেশের পর পরই আদালত কক্ষে হট্টোগোল শুরু হয় এবং আদালত প্রাঙ্গণ ও শহরে আউয়াল-সমর্থকরা বিক্ষোভ করে।

জামিন আবেদন নামঞ্জুর করার পর অজ্ঞাত কারণে জেলা জজ মো. আব্দুল মান্নানকে স্ট্যান্ডরিলিজ (তাৎক্ষণিক বদলি) করা হয়েছে বলে আদালতের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।

এরপর ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ হিসেবে দায়িত্ব পান যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালত নাহিদ নাসরিন। তাঁর আদালতে আউয়াল দম্পতির আগের করা জামিন আবেদন পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে শুনানির পর আদালত তাদের দুই মাসের জামিন দেন।

তাদের জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী মো. মুনসুর উদ্দিন হাওলাদার।  

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আজ সকালে আউয়াল দম্পতিকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশের খবর পেয়ে তাদের সমর্থকরা আদালত প্রাঙ্গণসহ শহরে বিক্ষোভ করলে আতঙ্কে সব দোকান-পাট বন্ধ হয়ে যায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বিক্ষোভকারীরা শহরের বিভিন্ন সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে যান চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে।

এদিকে সকাল থেকেই আদালতপাড়ায় র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-পুলিশের সমন্বয়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।

দুদকের আইনজীবী মুনসুর উদ্দিন হাওলাদার বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা, জালিয়াতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে পিরোজপুর-১ (পিরোজপুর-নাজিরপুর-স্বরূপকাঠি) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এ কে এম এ আউয়াল এবং তাঁর স্ত্রী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি লায়লা পারভীনের বিরুদ্ধে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর পৃথকভাবে তিনটি মামলা করে দুদক।

মামলাগুলোর মধ্যে একটিতে আউয়াল ও তাঁর স্ত্রী লায়লা পারভীনকে আসামি করা হয়েছে। বাকি দুটিতে এককভাবে আসামি করা হয়েছে আউয়ালকে। তিনটি মামলারই বাদী হয়েছেন দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আলী আকবর।

ওই তিন মামলায় আউয়াল দম্পতি গত ৭ জানুয়ারি হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ থেকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে আজ সকালে আউয়াল ও লায়লা পারভীন পিরোজপুর জেলা জজ আদালতে জামিন চাইলে আদালত আবেদন নাকচ করে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ওই আদেশের পর জেলা জজ মো. আব্দুল মান্নানের স্ট্যান্ডরিলিজ আদেশ হলে ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ নাহিদ নাসরিন তাদের জামিনে আবেদন পুনর্বিবেচনা করে জামিনের ওই আদেশ দেন।

আউয়াল ও তাঁর স্ত্রীর পক্ষে জামিনের আবেদন জানান অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন।