সাংসদ আলী আশরাফের চার জানাজা, শায়িত হবেন বাবা-মার পাশে
চার দফা জানাজা শেষে বাবা-মায়ের কবরের পাশে শায়িত করা হবে কুমিল্লা-৭ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মো. আলী আশরাফকে। সন্ধ্যায় পরিবারে পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আজ শুক্রবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সংসদ সদস্যের মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
সন্ধ্যায় মরহুমের একমাত্র ছেলে মুনতাকিম আশরাফ টিটু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে বলেন, আলী আশরাফের প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে আজ শুক্রবার বাদ এশা গুলশান আজাদ মসজিদে।
এরপর আগামীকাল শনিবার সকাল ১১টায় চান্দিনা মহিলা কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় জানাজা, তৃতীয় জানাজা হবে দোল্লাই নবাবপুর হাইস্কুল মাঠে। এবং সবশেষ চতুর্থ জানাজা হবে বাদ আছর গল্লাই ইসমাইল দাখিল মাদ্রাসা মাঠে।
এরপর গল্লাই পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে আলী আশরাফকে শায়িত করা হবে বলে জানান তাঁর ছেলে।
অধ্যাপক আলী আশরাফ গলব্লাডারের জটিলতা নিয়ে গত ২ জুলাই স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শরীরে নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। একপর্যায়ে পরীক্ষায় নিউমোনিয়া ধরা পড়ে বলে জানান মরহুমের একমাত্র ছেলে মুনতাকিম আশরাফ টিটু। তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে ৯ জুলাই তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে গত ২১ জুলাই বিকেল ৩টায় তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সেখান থেকে আর ফিরতে পারেননি প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ।
কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বর্ষিয়ান এই নেতার মৃত্যুতে তাঁর নির্বাচনী এলাকা চান্দিনাসহ জেলাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি স্ত্রী, চার মেয়ে, এক ছেলেসহ অসংখ্য রাজনৈতিক গুণগ্রাহী ও অনুসারী রেখে গেছেন।
স্বাধীনতাত্তোর জাতীয় সংসদের সবকনিষ্ঠ সদস্য
চান্দিনার গল্লাই মুন্সীবাড়ির মরহুম মো. ইসমাইল হোসেন মুন্সীর ছেলে আলী আশরাফ ১৯৬২ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগদান করে রাজনৈতিক অঙ্গনে পা রাখেন।
১৯৭০ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে আলী আশরাফ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ‘মই’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। ওই নির্বাচনে জয় না পেলেও ‘মাছ’ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
পরবর্তীতে সব নির্বাচনেই আলী আশরাফ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চমবারের মতো বিজয় লাভ করেন। ২০০০ সালে তিনি সপ্তম জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন।