সাতক্ষীরায় মোদিকে দেখতে না পাওয়ায় আক্ষেপ
বহু দূরব্যাপী কড়া নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার কারণে সাধারণ মানুষ যশোরেশ্বরী কালীমন্দির এলাকায় ঢুকতে পারেনি। যারা বাড়িঘরে ছিলেন তারাও বাইরে আসতে পারেনি। স্থানীয় বাজারঘাট দোকানপাট বন্ধ ছিল। অপরদিকে, মোদি দর্শনে আসা শ্যামনগরের ঈশ্বরীপুর এলাকা ঘিরে বিক্ষিপ্তভাবে শত শত মানুষ ছড়িয়ে থাকলেও মোদিকে দেখতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে ফিরে গেলেন তারা।
এ সময় তারা বলেন, আমরা বহুদূর থেকে এসেছি শুধুমাত্র নরেন্দ্র মোদিকে এক নজর দেখার জন্য। কিন্তু সেটা আর হলো না। শুধু আকাশে চারটি হেলিকপ্টারের উড়তে দেখেছি। আমরা মোদিকে দেখতে পারিনি।
এর আগে শ্যামনগর থেকে ঈশ্বরীপুরে যাওয়ার পথ সোনার মোড় ও বংশীপুর মোড়ের দুটি রাস্তার মুখ নিরাপত্তারক্ষীরা বন্ধ করে দেয়। ফলে কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল দূরের কথা কোনো লোকজনও চলাফেরা করতে পারেনি।
শ্যামনগর উপজেলার কামালকাটী গ্রামের বৃদ্ধ শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, ‘খুব ইচ্ছা ছিল মোদিকে দেখার। কিন্তু দেখতে পেলাম না’।
আজ শনিবার মন্দিরে পূজা দিতে আসা পূজারি লক্ষ্মীবালা মণ্ডল বলেন, ‘প্রতি মঙ্গলবার ও শনিবার এখানে এসে থাকি। আজ এসেছিলাম ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে দেখার জন্য কিন্তু তা আর ভাগ্যে হলো না।’
ঈশ্বরীপুর এলাকার বেশিরভাগ মানুষই একই কথা বলেন। এমনকি সাংবাদিকরাও জানান, ঢাকা থেকে আসা টিভি চ্যানেলের কয়েকজন সাংবাদিক ছাড়া সাতক্ষীরা এলাকার সাংবাদিকরাও এই নিরাপত্তা বলয়ে যাওয়ার অনুমতি পাননি। মোদিকে তারাও দেখতে পারেননি। তাঁর ছবিও ধারণ করতে পারেননি।
এর আগে আজ শনিবার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন ঈশ্বরীপুর গ্রামের এ সোবহান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করেন। এরপর তাঁকে সুদৃশ্য মোটর শোভাযাত্রা সহকারে ৯০০ মিটার দূরে যশোরেশ্বরী কালীমন্দির প্রাঙ্গণে নিয়ে আসা হয়। তাঁকে মন্দিরের সেবাইত পরিবারের পক্ষ থেকে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ও কৃষ্ণা চক্রবর্তী ফুলচন্দন দিয়ে বরণ করে নেন। এরপরই সনাতন ধর্মাবলম্বী রমনীরা পুষ্পবৃষ্টি, উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনি দিয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানান। নরেন্দ্র মোদি ধীরলয়ে মন্দির প্রাঙ্গণে উপস্থিত সুধীবৃন্দের সঙ্গে হাতজোড় করে নমস্কার দিয়ে হাস্যেজ্জ্বল মুখে কুশল বিনিময় করেন। এরপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় মন্দিরের অভ্যন্তরে শক্তিপীঠ দেবীমূর্তির কাছে। সেখানে ঢুকেই তিনি দেবীর মাথায় স্বর্ণমুকুট পরিয়ে দেন এবং ভক্তিপ্রণাম করে পূজা দেন। এ সময় তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়।
কয়েক মিনিটের পূজা শেষে তিনি কিছু সময়ের জন্য বিশ্রামকক্ষে প্রবেশ করেন। এরপর নরেন্দ্র মোদি ভারতীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি মন্দির প্রাঙ্গণ ঘুরে ঘুরে দেখেন। নরেন্দ্র মোদি আবারও বিদায়ী কুশল বিনিময় করে ১০টা ৩৫ মিনিটে মন্দির প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন। এরপর তিনি গোপালগঞ্জের উদ্দেশে রওনা করেন।