সাবেক সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে মাদ্রাসার বেতন-ভাতার বিল ব্যাংকে

Looks like you've blocked notifications!
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা পরিষদ ভবন। ছবি : এনটিভি

বাগেরহাটের রামপালের একটি দাখিল মাদ্রাসার মেয়াদোত্তীর্ণ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার বিল ব্যাংকে জমা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

জানা গেছে, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা আবু বকর সিদ্দিক দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ গত ১৯ এপ্রিলে শেষ হয়েছে। এরপর করোনা সংকটে মাদ্রাসা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়নি। বিধি অনুযায়ী কমিটি গঠন না হওয়া পর্যন্ত একটি এডহক কমিটি গঠন করতে হয়। আর ওই কমিটির সভাপতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত সব কাগজপত্রে স্বাক্ষর করবেন। মাদ্রাসার একজন শিক্ষক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এডহক কমিটি গঠন করা হয়নি।’

তাহলে শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বিলসহ জরুরি কাগজপত্রে কে স্বাক্ষর করছেন? এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলেন, ‘এ ব্যাপারে সুপার সাহেব ভালো বলতে পারবেন।’ 

এদিকে, ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি গাজী গিয়াস উদ্দিনের স্বাক্ষর জাল করে সর্বশেষ অক্টোবর মাসের শিক্ষকদের সরকারি বেতন-ভাতার বিল সোনালী ব্যাংক রামপাল শাখায় গত ৩ নভেম্বর জমা দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকে দাখিল করা বেতন-ভাতার বিলের কাগজপত্রে এর সত্যতা মিলেছে।

এ ব্যাপারে সাবেক সভাপতি গাজী গিয়াস উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কমিটির সভাপতি ছিলাম। কমিটির মেয়াদ ছয়-সাত মাস আগে শেষ হয়েছে। এখন আমি আর সভাপতি নেই। এরপরও বেতন-ভাতার বিলসহ বিভিন্ন জরুরি কাগজপত্রে আমার স্বাক্ষর জাল করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ছয় মাসের মধ্যে একদিনও আমার কাছে কোনো কাগজপত্র স্বাক্ষর করাতে আসেননি। শুনেছি অক্টোবর মাসের বেতন-ভাতার বিলে আমার স্বাক্ষর জাল করে তা ব্যাংকে জমা করা হয়েছে।’

আর এই স্বাক্ষর জাল করার ঘটনায় মাদ্রাসার সুপার শেখ আ. লতিফ ও সহকারী সুপার মো. মনিরুজ্জামান জড়িত বলে তিনি অভিযোগ করেন।

মাদ্রাসার সহকারী সুপার মনিরুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি  সুপার আব্দুল লতিফের ওপর দায় চাপিয়ে বলেন, ‘এ বিষয় আমি কিছু জানি না। আপনি সুপারের সঙ্গে কথা বলেন।’

সুপার শেখ আ. লতিফের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এডহক কমিটি গঠন হয়নি। এডহক কমিটি গঠনের জন্য আবেদন করা হয়েছে।’ স্বাক্ষর জাল করার  বিষয়টি শিকার করে তিনি বলেন, ‘এটা আমার ভুল হয়েছে।’

সোনালী ব্যাংক রামপাল শাখার ব্যবস্থাপক বলেন, ‘বিষয়টি আগে জানলে একটা কিছু করা যেত। বিল লেজারে পোস্টিং হয়ে গেছে, এখন আমার কিছু করার নেই।’

সর্বশেষ আজ রোববার সোনালী ব্যাক রামপাল শাখায়  খবর নিয়ে জানা গেছে, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই মাদ্রাসার বেতন-ভাতা সাময়িক বন্ধ রেখেছে। বিলে পুনরায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর নিয়ে তা ব্যাংকে জমা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।