সাবেক সাংসদ আরজুর বাজারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তদন্তদল

Looks like you've blocked notifications!
পাবনার নগরবাড়িতে এমপি বাজার পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর ও স্থানীয়দের বক্তব্য শুনেন মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ গঠিত তদন্তদলের প্রধান রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আব্দুল মান্নান। ছবি : এনটিভি

পাবনার নগরবাড়িতে সরকারি জমি দখল করে সাবেক সাংসদ খন্দকার আজিজুল হক আরজুর গড়ে তোলা অবৈধ বাজারের বিষয়ে আজ সোমবার দুপুরে তদন্তে এসেছে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের তদন্তদল।

তদন্তদল সরেজমিনে বাজারটি পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর ও স্থানীয়দের বক্তব্য শুনে। তদন্তদলের নেতৃত্ব দেন রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আব্দুল মান্নান। 

তদন্তদলের অন্য সদস্যরা হলেন পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আফরোজা আক্তার, সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল মান্নাফ আকন্দ, পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহিন রেজা ও জেলা নদী রক্ষা কমিটির সদস্য এস এম মাহবুব আলম।

তদন্তকালে কমিটির কাছে দোকান মালিকরাসহ সাবেক সাংসদ আরজু বাজার গড়ে তোলার পক্ষে কোনো বৈধ দলিলাদি উপস্থাপন করতে পারেননি। যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে বাজারের জন্য জায়গা ভরাট করার অভিযোগও স্বীকার করেন সাবেক সাংসদ আরজু। তবে, মানবিক বিবেচনায় বাজার উচ্ছেদ না করতে তদন্ত কমিটির কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, তদন্তদল আসার খবরে এমপি বাজারের বিভিন্ন দোকানের সাইনবোর্ড থেকে ‘এমপি বাজার’ লেখা মুছে দেয় সাবেক সাংসদের লোকজন। দুপুরে তদন্তদল ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পরে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের জমির নথি ও ম্যাপ পর্যালোচনা করে এবং সরেজমিন বাজার ঘুরে দেখে অবৈধ দখলের বিষয়ে নিশ্চিত হয়।

পাবনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের  উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল মান্নাফ আকন্দ বলেন, ১৯৫৩ সালে নগরবাড়ী ঘাটে জমি অধিগ্রহণ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। পরে এক সময় তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। চর জাগার পর জায়গাটি অবৈধ দখলে চলে যায়। কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও এখান থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা যায়নি।

আব্দুল মান্নাফ  আরও বলেন, বর্তমানে নগরবাড়ীতে আন্তর্জাতিক নৌবন্দর নির্মাণকাজ চলছে। সরকারের প্রয়োজনেই অবৈধ দখলে থাকা জমি পুনরুদ্ধার প্রয়োজন।

তদন্ত কমিটির সদস্যদের প্রশ্নের জবাবে সাবেক সাংসদ আরজু বলেন, আমি ব্যক্তিস্বার্থে কোনো দুর্নীতি করিনি। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের স্বার্থে বাজারটি গড়ে তুলতে সহায়তা করেছি। এটি অবৈধ হলেও জনস্বার্থে তা উচ্ছেদ না করে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

তদন্তাধীন বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি না হলেও দ্রুততম সময়ে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তদলের প্রধান আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, আমরা সব নথি ও ম্যাপের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি। সংশ্লিষ্ট সবার বক্তব্য শুনেছি। প্রতিবেদনে তা বিস্তারিত উল্লেখ করা হবে।

উল্লেখ্য, পাবনার বেড়া উপজেলায় নগরবাড়ীতে যমুনা নদীর পাড়ে সড়ক ও জনপথ এবং খাস খতিয়ানের প্রায় আট একর জমি দখল করে এমপি বাজার নামে অবৈধ বাজার গড়ে ২৬৪টি প্লট করে বিক্রি করে দেন পাবনা ২ আসনের সাবেক সাংসদ আরজু। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ।