সাম্প্রদায়িক শক্তিকে দমন করতে সরকারের পদক্ষেপ চান সেলিম
ভাস্কর্য নিয়ে বিরোধিতাকারী সাম্প্রদায়িক শক্তিকে দমন করতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
আজ শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠন এবং যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণির জন্মদিন উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি। শেখ ফজলুল করিম সেলিম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘যারা ভাস্কর্য নিয়ে বিরোধিতা করছে এরা একাত্তরের সেই সাম্প্রদায়িক শক্তি। ওই সময়ে তাদের ভূমিকা কী ছিল? তারা কখনো বাংলাদেশ চায়নি।’
বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে ভাস্কর্য থাকার কথা তুলে ধরে শেখ সেলিম বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে আজ ভাস্কর্য আছে। সৌদি আরবে আছে, ইরান, ইরাক মিসরে, তুরস্কে, ইন্দোনেশিয়া, মালেয়শিয়া, এমনকি তাদের প্রিয় পাকিস্তানেও ভাস্কর্য আছে। সেখানে ইসলাম যায় না, ইসলাম সব চলে যায় বাংলাদেশের জন্য।’
সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দাঁড়াতে যুবলীগ নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘এরা একাত্তরের সেই শক্তি যারা পাকিস্তানকে সহযোগিতা করছে, ৩০ লাখ লোককে মারায় সহযোগিতা করেছে, দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠনে সহযোগিতা করেছে। অগ্নিসংযোগ করেছে, লুটপাট করেছে। বঙ্গবন্ধু এদের বিচারের ব্যবস্থা করেছিলেন, কিন্তু জিয়াউর রহমান এসে তাদের ক্ষমা করে দিয়ে এই দেশকে আবার মৌলবাদীদের সুযোগ দিয়েছে। যুবলীগের নেতাকর্মীদের এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আর কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তি যেন বাংলাদেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।’
সাম্প্রদায়িক শক্তিকে দমনে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ সেলিম আরো বলেন, ‘স্বাধীনরতার এই সুবর্ণজয়ন্তীতে এটাই হোক আমাদের শপথ, বাংলাদেশে যেকোনো সাম্প্রদায়িক শক্তিকে দমন করতে হবে। সরকারকে বলব, এদের বিরুদ্ধে কোনো দুর্বলতা নেই, কঠোর হাতে দমন করতে হবে। এ সময় যুবলীগকে আদর্শিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং শেখ মণির ত্যাগের ব্রত নিয়ে কাজ করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণির স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘তিনি ছিলেন আপোসহীন। যা বিশ্বাস করতেন সেটিই করতেন। সত্তরের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে থেকে তিনি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। নিজে নির্বাচন না করে নির্বাচন পরিচালনা করার মতো ত্যাগ স্বীকার করেছেন তিনি। মণি আওয়ামী লীগের অন্যতম বড় নেতা ছিলেন, ছিলেন খুবই সাহসী। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হিসেবে তিনি যেভাবে কাজ করেছেন, তা শুধু একজন দক্ষ সংগঠকের দ্বারাই সম্ভব।
যুবলীগের চেয়ারশ্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিল। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ, মঞ্জুর আলম শাহীন, শেখ ফজলে ফাহিম, মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জহির উদ্দিন খসরু, মশিউর রহমান চপল, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, উপতথ্য ও যোগাযোগ (আইটি) বিষয়ক সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত প্রমুখ।
এ ছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইনুদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারোয়ার হোসেন বাবুসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।