সার্জেন্ট মহুয়ার মামলায় আসামির কেন নাম নেই, জানাল পুলিশ

Looks like you've blocked notifications!
মনোরঞ্জন হাজং ও ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মহুয়া হাজং। ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর বনানীতে সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের বাবা গাড়িচাপায় পা হারানোর ঘটনায় কার দোষ তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার।

আজ রোববার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিবির প্রধান এ কথা বলেন।

হাফিজ আক্তার বলেন, ‘পুলিশ সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের বিষয়টি আমিও জানি। এই ঘটনায় আমাদের গুলশান বিভাগের বনানী থানায় একটি মামলা হয়েছে, তদন্ত চলছে।’

সার্জেন্ট মহুয়ার করা মামলায় আসামির নাম না দেওয়ার বিষয়ে হাফিজ আক্তার বলেন, ‘নাম না দেওয়ার কারণ, ঘটনা কী ঘটেছে সে বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কার দোষ সেটি খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সিসিটিভি ফুটেজ ও মামলার বাদী তাঁর অভিযোগে আসামির নাম উল্লেখ করার পরেও অজ্ঞাত আসামি হিসেবে মামলা নেওয়ার বিষয়ে একই প্রশ্নে জানতে চাইলে হাফিজ আক্তার বলেন, ‘পুলিশ সার্জেন্ট মহুয়া আমাদেরই একজন সদস্য। তবে যেহেতু মামলা হয়েছে তাই সাধারণ মানুষ যেভাবে বিচার পান তাঁর বিষয়টি সেভাবে দেখা হবে। তাঁর মামলার বিষয়ে গুলশান বিভাগ কাজ করেছে।’

পুলিশের পক্ষ থেকে মহুয়ার পাশে থাকবেন কি না জানতে চাইলে ডিবির প্রধান বলেন, ‘আমরা তাঁর পাশে অবশ্যই আছি। সে তো আমাদেরই লোক। তবে আইনে যা হয়, সেভাবেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনের চোখে যেটা হওয়ার সেটাই হবে।’

গত ২ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি সড়কে একটি দ্রুতগতির গাড়ির চাপায় আহত হন সার্জেন্ট মহুয়ার বাবা মনোরঞ্জন হাজং। তাঁকে উদ্ধার করে শ্যামলীর পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। গুরুতর অবস্থার কারণে অস্ত্রোপচার করে তাঁর ডান পা কেটে ফেলতে হয়েছে। এরপর শাহবাগের বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাঁকে।

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মনোরঞ্জন হাজং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার। ঘটনার পর তাঁর মেয়ে মহুয়া হাজং বনানী থানায় একাধিকবার মামলা করার জন্য গেলেও পুলিশ মামলা নিতে রাজি হয়নি। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে মানুষ। পরে বাধ্য হয়ে ঘটনার ১৪ দিন পর গত ১৬ ডিসেম্বর মামলা নেয় বনানী থানা। মামলায় অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে খবর এল, গাড়িটির চালক ও বিচারপতির ছেলে সাঈদ হাসান গত ১৪ ডিসেম্বর জিডি করেছেন।

জিডিতে দুর্ঘটনার জন্য ভুক্তভোগীকেই পুরো দোষ দেওয়া হয়েছে। এমনকি এ ঘটনায় মনোরঞ্জন হাজংকে আসামি হিসেবে মামলা করা উচিত ছিল বলেও জিডিতে উল্লেখ রয়েছে। দুর্ঘটনার পর পর্যাপ্ত আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন সাঈদ হাসান।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে চালকের আসনে ছিলেন বিচারপতি রেজাউল হাসানের ছেলে সাইফ হাসান। তাঁর স্ত্রী অন্তরা সাইফ আর বন্ধু রোয়াদও গাড়িতে ছিলেন। দুর্ঘটনার পরই প্রভাবশালীদের চাপে গাড়ি ও এর যাত্রীদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। একইসঙ্গে তারা মহুয়া হাজংয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আপসের চেষ্টাও চালায়। কিন্তু মহুয়া হাজং মামলার বিষয়ে অটল থাকায় এবং গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।