সাহেদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছে র‍্যাব

Looks like you've blocked notifications!
সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলায় র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদ। ফাইল ছবি

রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদকে ‘বিশ্ব চিটার, চতুর, ধুরন্ধর ও অর্থলিপ্সু’ বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে। করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা না করে রিপোর্ট প্রদান করার অভিযোগে গত ১৫ জুলাই ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অস্ত্র-গুলিসহ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল র‍্যাব।

সেই সাহেদকে দ্বিতীয় দফায় আগামীকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটনে ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তোলা হবে। এদিকে গত ২৩ জুলাই সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অস্ত্র মামলায় সাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছে র‍্যাব-৬। বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন র‍্যাবের সাতক্ষীরার কোম্পানি কমান্ডার (সিপিসি-১) বজলুর রশীদ।

বজলুর রশীদ বলেন, ‘আমরা গত ২৩ জুলাই সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মো. সাহেদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অস্ত্র মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছি। আমি শুনেছি, আগামীকাল র‍্যাব-১ প্রতারণার মামলায় সাহেদকে ঢাকার  সিএমএম আদালতে তুলবে। এরপর কীভাবে রিমান্ড আবেদন শুনানি হবে তা এখনো আমি জানি না।’

গত ১৫ জুলাই রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে সাতক্ষীরার দেবহাটা থানায় মো. সাহেদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছিল। মামলা নম্বর পাঁচ। এই ব্যাপারে জানতে চাইলে দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা মামলাটি র‍্যাবের কাছে হস্তান্তর করেছি। এরপর আইনি প্রক্রিয়ায় যা করার সবই র‍্যাব করবে।’

সাহেদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলার পর ওসি বিপ্লব কুমার সাহা জানিয়েছিলেন, র‌্যাব-৬-এর সাতক্ষীরা কোম্পানির উপসহকারী পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম এ মামলার বাদী হয়েছেন। মামলায় দুইজন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এঁরা হচ্ছেন মো. সাহেদ ও বাচ্চু মাঝি। এ ছাড়া একজন অজ্ঞাতনামা আসামিও রয়েছে। ১৯৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯ ধারা এবং ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়।

১৫ জুলাই সকালে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় দেবহাটার কোমরপুরে র‌্যাবের হাতে একটি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগাজিনসহ সাহেদ র‍্যাবের হাতে ধরা পড়েন। পরে তাঁকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে যান র‍্যাব সদস্যরা। সেদিন বিকেলে তাঁকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর বিকেল সোয়া ৫টার দিকে সাহেদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেখানে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষা শেষে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে আবার ডিবিতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ডিবি পুলিশ তাঁকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়। এরই মধ্যে সাহেদের মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র‍্যাব। ডিবি পুলিশ গত ২৩ জুলাই সাহেদকে র‍্যাবের কাছে হস্তান্তর করে।

রোববার সকাল ১০টার দিকে সাহেদকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হবে। এই ব্যাপারে জানতে চাইলে র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক আশিক বিল্লাহ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আগামীকাল সকাল ১০টার সময় মো. সাহেদকে ঢাকার সিএমএম আদালতে তোলা হবে।’

চিকিৎসাসেবা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গত ৬ জুলাই বিকেল থেকে রাত অবধি উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালের মূল কার্যালয় ও মিরপুর শাখায় অভিযান পরিচালনা করেন র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় হাসপাতালটির আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটক করা হয়।

এরপর ৭ জুলাই রাজধানীর উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের কোভিড ডেডিকেটেড রিজেন্ট হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয় র‍্যাব-১। এ ছাড়া উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের রিজেন্ট গ্রুপের মূল কার্যালয়ও সিলগালা করা হয়। ৭ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করা হয়।

রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটি প্রায় সাড়ে চার হাজার করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছে। একজন কম্পিউটার অপারেটর বসে বসে সাড়ে চার হাজার রিপোর্ট তৈরি করেছেন। মনগড়া রিপোর্ট পজিটিভ-নেগেটিভ দিয়েছেন।