সিএমএইচে করোনার টিকা নিলেন চিফ অব জেনারেল স্টাফ

Looks like you've blocked notifications!

রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারোয়ার হাসানসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

টিকা নেওয়ার পর লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারোয়ার বলেন, ‘দেশে যে আজ করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হলো, তাতে টিকা নিচ্ছি, এজন্য খুব ভালো লাগছে আমার। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশই এখন টিকা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। আমরা এখন টিকা দেওয়া শুরু করতে পেরেছি, এটা আমাদের একটা স্বস্তির ব্যাপার।’

এরই মধ্যে রাজধানীতে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনার টিকা নিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এর আগে আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে মহাখালীতে স্বাস্থ্য ভবনে ভার্চুয়ালি দেশব্যাপী করোনার টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এক হাজার ১৫টি কেন্দ্রে সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত চলবে টিকাদান।

টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, এ পর্যন্ত যারা করোনার টিকা নিয়েছেন সবাই সুস্থ আছেন, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। সারা বছরই টিকাদান কার্যক্রম চলবে।

এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে করোনার টিকা নিয়েছেন তিন বিচারপতি। আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে টিকা নেন তাঁরা।

করোনার টিকা নেওয়া তিন বিচারপতি হলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি জিনাত আরা, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম ও একই বেঞ্চের অপর বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএসএমএমইউয়ে করোনার টিকা নেবেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অন্য বিচারপতিরাও।

গত ২৮ জানুয়ারি দেশের দ্বিতীয় কেন্দ্র হিসেবে বিএসএমএমইউয়ে টিকাদান শুরু হয়। সেদিন প্রথম টিকা নিয়েছিলেন বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।

এদিকে, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, রংপুর, সিলেটসহ দেশের সব স্থানে টিকা নিতে একযোগে অংশ নিয়েছেন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। এছাড়াও কর্মসূচির আওতায় জনপ্রতিনিধি, বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংবাদিকসহ ১৫ ধরনের পেশাজীবীকে সরকারের পক্ষ থেকে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের পাশাপাশি দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান সব মুক্তিযোদ্ধা ও বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিকরা প্রথম ধাপের অগ্রবর্তী তালিকায় রয়েছেন।

এদিকে, গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সারা দেশে এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে টিকা দিতে প্রস্তুত করা হয়েছে দুই হাজার ৪০০টি টিম। এ ছাড়া টিকা নিতে শনিবার দুপুর পর্যন্ত তিন লাখ ২৮ হাজার মানুষ অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন।

কোভিড-১৯ মহামারিতে গত ২৭ জানুয়ারি করোনার টিকা জগতে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এক নার্সের টিকা গ্রহণের পর ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি বিভিন্ন পেশার মোট ৫৬৭ জন ফ্রন্টলাইনারকে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকা দেওয়া হয়। টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের পর্যবেক্ষণে রাখতে ৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার পর্যন্ত টিকাদান বন্ধ রাখা হয়।

শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, টিকা গ্রহণের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ার বাইরে, টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের অন্য কোনো শারীরিক অসুবিধা হয়নি। তাই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৭ ফেব্রুয়ারি রোববার থেকে সারা দেশে শুরু হচ্ছে করোনার টিকা প্রদান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত তিন লাখেরও বেশি নিবন্ধনকারীদের এসএমএসের মাধ্যমে টিকার কেন্দ্র ও সময় জানানো হয়েছে। এ ছাড়া টিকা কার্যক্রম শুরুর পর সাধারণ মানুষ চাইলে, টিকাদান কেন্দ্রে এসেও অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারবেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, প্রাথমিকভাবে ১৮ বছরের কম বয়সী এবং গর্ভবতী নারীসহ কিছু মানুষকে করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে না। টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারীদের পরবর্তী ২৮ দিন অর্থাৎ চার সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে বলেও জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।