সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন

Looks like you've blocked notifications!
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ফাইল ছবি

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম। গতকাল বৃহস্পতিবার এ পরিবর্তন করা হয়। র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আশিক বিল্লাহ আজ শুক্রবার বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন।

আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘পরিবর্তনের আগে র‌্যাব-১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জামিলুল হক মামলাটির তদন্ত করছিলেন। তাঁর স্থলে নতুন করে খায়রুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া পুলিশের চার সদস্য এবং এ ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় তিন সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে র‌্যাব। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে র‌্যাবের একটি টিম সাত আসামিকে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে নিয়ে যায়। এরপর তাদের কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে তাদের প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। পরে আজ দুপুর ১২টার দিকে তাদের র‍্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

র‍্যাব সূত্রে জানা যায়, সাত আসামির স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার মোহাম্মদ মোকাম্মেল হোসেন জানান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলায় আটক আসামিদের মধ্যে সাত আসামিকে আজ সকাল ১০টার দিকে রিমান্ডের জন্য নিয়ে গেছে র‌্যাব। প্রথমে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।

যাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছে তারা হলো–সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী মো. নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াছ।

কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে বিচারক তামান্না ফারাহ এই সাতজনের প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কক্সবাজার র‌্যাব-১৫-এর করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গত বুধবার এ আদেশ দিয়েছিলেন। পরদিন বৃহস্পতিবার জেলগেটে গিয়ে আসামিদের ছাড়াই ফেরত চলে যায় র‌্যাবের বহর। আজ সকালে সাত আসামিকে জেল থেকে নিয়ে যায় র‌্যাব-১৫।

গত ৬ আগস্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করা টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত ও এসআই নন্দ দুলালকে এখনো রিমান্ডে নেওয়া হয়নি। এ তিনজন কারাগারে রয়েছে। তাদেরও যেকোনো সময় কারাগার থেকে র‌্যাব হেফাজতে রিমান্ডে নেওয়া হবে।

গত ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দুটি মামলা করে। আর রামু থানায় একটি মামলা করে।

পরে ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এতে নয়জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলেন টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের প্রত্যাহার হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলী, উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. মোস্তফা ও এসআই টুটুল। এদের মধ্যে আসামি মোস্তফা ও টুটুল পলাতক।

মামলাটি তদন্ত করছে কক্সবাজার র‌্যাব-১৫। ওই মামলায় ওসি প্রদীপসহ তিনজনকে সাত দিনের রিমান্ড ও অন্য আসামিদের দুদিন করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন আদালত। ওসি প্রদীপসহ সাত আসামি এখনো কারাগারে রয়েছে। একই ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় ৯ আগস্ট সিনহার সহযোগী শিপ্রা দেবনাথ ও ১০ আগস্ট সাহেদুল ইসলাম সিফাত জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পান।