সিপিডির গবেষণাটি আসলে কেমন, প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর
‘বর্তমানে দেশের এক-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ সরকারের সহায়তার আওতায় এসেছে এই বিষয়টি সিপিডির গবেষণায় উঠে এলো না, এই বিষয়টি আশ্চর্যের।' তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এই মন্তব্য করে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘তাদের গবেষণাটি আসলে কেমন!'
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। পরে মন্ত্রীর বক্তব্যের ভিডিওবার্তা গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে সম্প্রতি বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) মন্তব্য করে বলে যে, ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য প্রণোদনা নেই'।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ৫০ লাখেরও বেশি পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরে মাসে ত্রিশ কেজি করে চাল দিচ্ছে বছরে সাত মাস। কার্যত ৫০ লাখ পরিবারের প্রায় আড়াই কোটি মানুষ এ সাহায্য পাচ্ছে। এই সহায়তার সময়সীমা বৃদ্ধির চিন্তা-ভাবনাও করছে সরকার। এ ছাড়া ১৭ লাখ বিধবা, ৪৪ লাখ বয়স্ক, ১৬ লাখ দুস্থসহ প্রায় এক কোটি মানুষকে বিভিন্ন ধরনের ভাতা দেওয়া হয়। করোনার কারণে কর্মহীন জনগোষ্ঠীর জন্য ৭৬০ কোটি টাকাসহ পর্যাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এ সবকিছুই প্রান্তিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য। কিন্তু আমার কাছে আশ্চর্য লাগছে, সিপিডির মতো একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় এই বিষয়গুলো আসলো না!'
গত ১১ বছরে দেশের জিডিপি প্রায় সাড়ে তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ও ক্রয়ক্ষমতাও প্রায় তিনগুণ বেড়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য ১১ বছরে সিপিডি এই উন্নয়নের কোনো প্রশংসা করতে পারেনি। তাদের যে চিরাচরিতভাবে দোষ খোঁজার চেষ্টা, সে হিসেবে তাদের এই মন্তব্য গতানুগতিক।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই। এই বিশেষ পরিস্থিতিতে শুধু সমালোচনার খাতিরে যেন সমালোচনা না করি। সরকারকে পরামর্শ অবশ্যই যে কেউ দিতে পারে, সেই পরামর্শ গ্রহণ করার মানসিকতা সরকারের আছে।’
বিএনপি নেতাদের সাম্প্রতিক মন্তব্য সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেখতে পাচ্ছি গত কিছুদিন ধরে ঘরে বসে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য রাখতে। আর ঢাকা শহরে হাতেগোনা কিছু সামগ্রী বিতরণ করে আর ফটোসেশন করে সরকারের সমালোচনা করতেই তারা ব্যস্ত। তারা জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি।’
‘বিএনপির এই বক্তব্যগুলো আসলে হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেলে মানুষ যেভাবে বক্তব্য রাখে, সেই রকম'- উল্লেখ করে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তার প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে তাদের বিভিন্ন নেতা প্রতিদিন বক্তব্য রাখছেন। আমরা জনগণের পাশে আছি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের পাশে আছে।’
বক্তব্যের শুরুতে সব গণমাধ্যমকর্মীসহ দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান তথ্যমন্ত্রী।
এ সময় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা ও উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।