সিরাজগঞ্জে বজ্রপাতে এক মাসে ২১ জনের মৃত্যু

Looks like you've blocked notifications!
প্রতীকী ছবি

সিরাজগঞ্জে সাম্প্রতিক সময়ে বজ্রপাতের তীব্রতা বেড়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যা। গত এক মাসে জেলায় শিক্ষার্থী, কৃষকসহ ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কৃষকের সংখ্যা বেশি। এর ফলে জেলাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এদিকে, বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় শাহজাদপুর উপজেলায় সড়কের দুই ধারে তালগাছ রোপণ করেছেন স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মীরা। তবে গ্রাম পর্যায়ে মানুষকে সচেতন করতে সরকারিভাবে প্রচার চালানোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা, লম্বা গাছের সংখ্যা কমে যাওয়া, আকাশে কালো মেঘ ও মেঘে-মেঘে ঘর্ষণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বজ্রপাত এবং এর কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে।

সিরাজগঞ্জে গত এক মাসে বজ্রপাতে শাহজাদপুরে আটজন, উল্লাপাড়ায় চারজন, তাড়াশে দুজন, কাজীপুরে দুজন, কামারখন্দে একজন, রায়গঞ্জে একজন, বেলকুচিতে একজন, সলঙ্গায় একজন ও এনায়েতপুরে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এসব ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলোতে চলছে শোকের মাতম। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জনের পরিবারকে এরই মধ্যে সরকারিভাবে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বাকিদের পরিবারকেও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কাজ চলছে।

বজ্রপাতে নিহত হাসেম আলীর ভাই হাসমত আলী বলেন, ‘আমরা তিন ভাই, ভাতিজা ও ভাগ্নে জমিতে কাজ করছিলাম। এ সময় আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যায় এবং ঝড়-বৃষ্টি হয়। পরে আমরা সবাই জমি থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। ওই সময় বজ্রপাত হয়। আমাদের শরীরেও বিদ্যুত অনুভূত হয়। পেছনে ফিরে দেখি আমার ভাই হাসেম আলী মাটিতে পড়ে আছে। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’

শাহজাদপুর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আশিকুল হক দিনার বলেন, ‘শাহজাদপুরে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ও ৩০ মে বজ্রপাতে এই উপজেলায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক-নির্দেশনায় শাহজাদপুরে বিভিন্ন সড়কে যুবলীগের পক্ষ থেকে তালগাছ রোপণ করা হয়েছে। বজ্রপাত থেকে মানুষকে রক্ষা করতে হলে তালগাছ রোপন করতে হবে। পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করতে গ্রাম পর্যায়ে প্রচার চালাতে হবে।’

শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রুবেল হোসেন বলেন, ‘শাহজাদপুরে বজ্রপাতে যারা নিহত হয়েছে, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই জমিতে কাজ করছিলেন। ঝড়-বৃষ্টির সময় তাঁরা ঘরে ফেরেন না। তাঁদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। জেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বজ্রপাত সম্পর্কে সচেতনতার জন্য প্রচার চালানো দরকার। তাহলে বজ্রপাত থেকে মানুষ রক্ষা পাবে।’

জেলা  ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, ‘বজ্রপাত থেকে মানুষ যাতে রক্ষা পায়, সে জন্য আমরা সচেতনতামূলক কাজ করছি। উঁচু গাছ লাগাতে হবে। ঝড়-বৃষ্টির সময় বাড়ির বাইরে ও গাছের নিচে থাকা যাবে না। গত এক মাসে জেলায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জনের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বাকি যারা রয়েছে, তাদের পরিবারকে সহায়তার জন্য তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।’