সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, তীব্র নদীভাঙন
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণের কারণে যমুনা নদীর পানি বেড়ে সিরাজগঞ্জে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
চলতি বছরের বন্যায় এর আগে জেলার কাজীপুর, সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর, চৌহালী ও উল্লাপাড়ার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এবার পুনরায় যমুনার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় আবারও তারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুর রহিম জানিয়েছেন। পানিবন্দি এসব মানুষের মধ্যে অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচু স্থান ও বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন। এসব মানুষের মধ্যে খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
পানি বৃদ্ধির কারণে অভ্যন্তরীণ ফুলজোড়, করতোয়া, হুরাসাগর, গুমানীসহ বিভিন্ন নদনদীর পানি বেড়েই চলেছে। পানি বাড়ার কারণে আবার তলিয়ে যেতে শুরু করেছে নিম্নাঞ্চল। পানি জমেছে ফসলের মাঠে।
এদিকে, পানি বৃদ্ধির কারণে নদী-তীরবর্তী অঞ্চলে শুরু হয়েছে তীব্র নদীভাঙন। বিশেষ করে জেলার শাহজাদপুর উপজেলার এনায়েতপুর থানাধীন ব্রাহ্মণ গ্রাম, আরকান্দি, পাকুরতলা, ঘাটাবাড়ি, কুঠিপাড়া এলাকায় যমুনা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনে বিলীন হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বসতভিটা, ফসলি জমিসহ বহু স্থাপনা। হুমকির মুখে রয়েছে এনায়েতপুর কাপড়ের হাট, খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মসজিদ, মাদ্রাসা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বহু স্থাপনা।
এদিকে সিরাজগঞ্জ কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, যমুনায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিম্নাঞ্চল নিমজ্জিত হয়ে তলিয়ে যাচ্ছে ফসল। এরই মধ্যে জেলার কাজীপুর, সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে তিন হাজার ৪০৬ হেক্টর জমির রোপা আমন, ৯৩১ হেক্টর জমির মাষকলাই, ২৩৪ হেক্টর জমির শীতকালীন সবজি, ৮০ হেক্টর বাদাম ও ৬৮ হেক্টর জমির মরিচ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুর রহিম জানিয়েছেন, এরই মধ্যে বন্যাকবলিত মানুষের মধ্যে তিন হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পানি বাড়তে থাকলে চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হবে।