সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি বিপৎসীমার ওপরে, স্পারে ধস

Looks like you've blocked notifications!
সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি বেড়েই চলেছে। এতে জেলার বন্যার অবনতি হয়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ছবি : এনটিভি

সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি বেড়েই চলেছে। এতে জেলার বন্যার অবনতি হয়েছে। পানি বাড়ার কারণে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি। পানিবন্দি অনেক মানুষ বাঁধ ও উঁচু স্থানে ঝুপড়ি ঘর তুলে অবস্থান নিয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা হার্ডপয়েন্ট এলাকায় জেলা পয়েন্টে পানি ৩৩ সেন্টিমিটার বেড়েছে। জেলা পয়েন্টে আজ বুধবার পানি বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কাজীপুর উপজেলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি বাড়ায় নদী-তীরবর্তী কাজীপুর উপজেলার ক্ষুদবান্ধি, সিংগড়াবাড়ি ও শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরীতে ব্যাপক ঘূর্ণাবর্তের কারণে ভাঙন বেড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে বন্যাকবলিত জেলার কাজীপুর, বেলকুচি, সদর, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার দেড় লাখ মানুষ।

এদিকে, সদর উপজেলার শিমলায় পাউবোর ক্ষতিগ্রস্ত ‘শিমলা স্পার’টির আরো প্রায় ৫০ মিটার পাকা কংক্রিট অংশ গত সোমবার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় এক মাসের ব্যবধানে তিনবার ধসে পড়ল স্পারটি। ৫০ মিটার মাটির ও ৫০ মিটার পাকা কংক্রিট অংশসহ ঘূর্ণাবর্তের কারণে ১০০ মিটার নদীতে চলে যায়। পানির মধ্যে বাকি ৫০ মিটার অবকাঠামো দাঁড়িয়ে আছে।

পাউবোর পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ (পওর) বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম জানান, জেলার প্রায় ৮০ কিলোমিটার নদীতীর রক্ষা বাঁধের ওপর ভাঙনের ঝুঁকি ঠেকাতে ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছরে সদর, কাজীপুর ও এনায়েতপুরে ১১টি স্পার ও গ্রোয়েন নির্মাণ করা হয়। সময়মতো রক্ষণাবেক্ষণ না করায় অধিকাংশই ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ে। ওই সব অবকাঠামোর মধ্যে শিমলা স্পারটির পাশে ব্যাপক ঘূর্ণাবর্তের কারণে এ দশা হয়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজীপুর, সদর ও শাহজাদপুরের কয়েকটি স্থানে ভাঙনও বেড়েছে।

বন্যায় জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৩টি ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় রয়েছে,  ২২০টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ও এক হাজার ৬০টি ঘরবাড়ি আংশিক, তিন হাজার ৫৫০ হেক্টর ফসলি জমি, ৩০টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ও পাঁচটি আংশিক, তিন কিলোমিটার রাস্তা ও বাঁধ সম্পূর্ণ এবং সাত কিলোমিটার আংশিক, তিনটি ব্রিজ ও কালভার্ট সম্পূর্ণ ও সাতটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ ছাড়া ৩৩টি ইউনিয়নের ২১৬টি গ্রামের প্রায় ৩৫ হাজার পরিবারের এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুর রহিম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বন্যাকবলিত মানুষের মধ্যে ইতোমধ্যে ২৬৭ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২৫৮ টন জিআর চাল, সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা, গো-খাদ্যের জন্য দুই লাখ ও শিশুখাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা এবং ৩০ হাজার শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে।