সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণের তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন চায় বিএনপি
সীতাকুণ্ড বিএম ডিপোর বিস্ফোরণ ঘটনার তদন্তে ‘নিরপেক্ষ কমিশন’গঠনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ সোমবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এই দাবি জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি মনে করি যে, এই ঘটনার জন্য অবিলম্বে একটা নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করা উচিত। এর জন্য যারা দায়ী তাদের খুঁজে বের করা দরকার। কী ভয়াবহ? মানুষের বডি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, একেবারে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গেছে, চেনা যাচ্ছে না। হঠাৎ করে যে বিস্ফোরণ হবে-এটাও তারা বুঝতে পারেনি। যার ফলে এই ঘটনাগুলো ঘটেছে। নিহতদের পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং আহতদের সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি।’
একই সঙ্গে এই ঘটনায় হতাহতদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ এবং দেশের সকল কন্টেইনার ডিপোতে তদারিক ব্যবস্থার চালু করার দাবিও জানান বিএনপি মহাসচিব।
কেমন তদন্ত কমিশন চান জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি কিন্তু এখন পর্যন্ত অতীতের কোনো ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন দেখিনি। আমরা যখন নিরপেক্ষ কথাটা বলি, এটা মিন করি যে, দলনিরপেক্ষ এবং সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক নাই, যারা এক্সপার্টস আছেন, যারা বিশেষজ্ঞ আছেন, সত্যিকার অর্থে বিষয়গুলো যারা বুঝেন, তাদেরকে দিয়ে তদন্ত করা। দল নিরপেক্ষদের দিয়ে তদন্ত করতে হবে।’
গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে বেসরকারি ওই কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। এই ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যু এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
সীতাকুণ্ডে ঘটনার প্রসঙ্গে টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল একজন আর্মির দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের কথা টেলিভিশনে শুনছিলাম- তিনি বলছিলেন যে, তাদের কাছে প্রয়োজনীয় উপকরণ নেই। আজকে আমি এই জায়গায় প্রশ্ন করতে চাই- এই সরকার তাহলে কী করছে?’
তিনি বলেন,‘আমি যে কথাটা বলছি যে, তথাকথিত অবকাঠামো নির্মাণের নামে নিজেদের পকেট ভারী করা, দুর্নীতি করা-এটাই তাদের মূল লক্ষ্য। জনগণের কল্যাণের জন্য, জনগণের সেফটি-সিকিউরিটির জন্য, মানুষকে ভালো রাখার জন্য, এই সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। এই সরকার যেহেতু নির্বাচিত সরকার না, সে কারণে তাদের জবাবদিহিতা নেই।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন শোষকের দলের পরিণত হয়েছে। এখন আর শোষিতের পক্ষে কথা বলার তাদের সুযোগ নেই। কারণ তারাই এখন শোষক হয়ে গেছে। শোষন করছে বাংলাদেশকে। এখন তারা লুট করছে, দুর্নীতি করছে, অর্থপাচার করছে। মানুষের সমস্ত আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলোকে ধবংস করে দিচ্ছে। এখন তো আপনার বাংলাদেশের সামনে আর কিচ্ছুই নেই, পদ্মা সেতু ছাড়া।’
তিনি বলেন,‘ অথচ এরমধ্যে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটলো, মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটলো সম্পূর্ণভাবে তাদের ব্যর্থতার জন্য। আমি পত্রিকায় দেখলাম যে, প্রধানমন্ত্রী একটু সাহস দেওয়ার চেষ্টা করেছেন যে, পদ্মা ব্রিজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। তাতে তো এই সমস্যার (সীতাকুণ্ড বিস্ফোরণ) সমাধান হয় না।’ জাতীয় শোক ঘোষণা করা উচিত ছিল বলে মনে করেন মির্জা ফখরুল।