সুনামগঞ্জে সাংসদকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট, সাংবাদিক গ্রেপ্তার
সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় সাংবাদিক মাহতাব উদ্দিন তালুকদারকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বলাকাপাড়া এলাকার নিজ বাসা থেকে মাহতাবকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে রাত ১২টায় ধর্মপাশা থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়।
মামলা বাদী হন ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের উত্তরবীর গ্রামের বাসিন্দা বেনুয়ার হোসেন খান। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেনের সমর্থক।
গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিক মাহতাব উদ্দিন তালুকদার এসএ টিভির জেলা প্রতিনিধি ও সুনামগঞ্জ থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক হাওরাঞ্চলের কথা’ পত্রিকার সম্পাদক। তাঁর বাড়ি সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের স্বরূপগঞ্জ গ্রামে।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন জানান, আসামি মাহতাব উদ্দিন তালুকদার তাঁর নিজের ফেসবুকে গতকাল রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন নিয়ে একটি পোস্ট দেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেন বেনুয়ার হোসেন খান। মামলার পর তাঁরা বিষয়টি সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশকে জানান। পরে সদর থানা পুলিশ ধর্মপাশা থানা পুলিশের সহায়তায় আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
মাহতাব উদ্দিন তালুকদারকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সহিদুর রহমান।
এদিকে সাংবাদিক মাহতাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তারে উদ্বেগ জানিয়ে একটি বিবৃতি জানিয়েছে সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাব। সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি পঙ্কজ কান্তি দে ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মহিম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগের কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, মাহতাব উদ্দিন সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্য নন। তারপরও তাঁকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্যকে নিয়ে ফেসবুকে মিথ্যা পোস্ট দিয়েছেন। এ ঘটনায় ধর্মপাশা থানায় মামলা হয় সোমবার রাত ১২টায়। এর পর রাত ২টায় সুনামগঞ্জ সদর থানা পুলিশ শহর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু মাহতাব উদ্দিন দাবি করেছেন, তিনি সংসদ সদস্যকে নিয়ে কোনো পোস্ট দেননি। গতকাল রাতে তাঁর ফেসবুক আইডি হ্যাকড হয়েছিল। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর তিনি অন্য একজনের সহায়তায় সেটি উদ্ধার করেন। পরে তিনি নিজেই তাঁর ফেসবুকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
‘যেহেতু মাহতাব উদ্দিন দাবি করছেন, তিনি এটি করেননি, তাঁর ফেসবুক আইডি হ্যাকড হয়েছিল তাহলে বিষয়টির তদন্ত হতে পারত। সামাজিকভাবেও নিষ্পত্তির সুযোগ ছিল। আমরা বিষয়টির সঠিক তদন্ত চাই। সংসদ সদস্যের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য ইচ্ছেকৃত কোনো উদ্যোগ হলে সেটিরও বিচার চাই। একইসঙ্গে মাহতাব উদ্দিন যাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহারের শিকার না হন সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানাই’, বলা হয় প্রেসক্লাবের বিবৃতিতে।