সুরমা নদীতে আটকেপড়া ঢাবি শিক্ষার্থীরাসহ বাকিরা উদ্ধার

Looks like you've blocked notifications!
সুনামগঞ্জে আটকে পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরসহ অন্যদের সেনাবাহিনীর সহায়তায় উদ্ধার করা হয়েছে। ছবি : আইএসপিআর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থীসহ ৮০ জন বহনকারী যে লঞ্চটি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা নদীতে আটকা পড়েছিল, অনেক চেষ্টার পর সেটি গতকাল শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তীরে ভিড়েছে। আজ রোববার সকাল পর্যন্ত তাঁরা তীরেই অবস্থান করেন। পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে ক্যান্টনমেন্টের উদ্দেশে রওনা দেয়।

নদীতে আটকে পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শোয়াইব আহমেদ আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শোয়াইব আহমেদ জানান, ‘আমরা গতকাল দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে দোয়ারাবাজার এলাকার একটি ফেরিঘাটে আশ্রয় নিয়েছিলাম এবং সকাল পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করেছিলাম। আজ সকাল ৮টার পর সেনাবাহিনী আমাদের উদ্ধার করতে আসে। এখন আমরা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২১ জন একটি নৌযানে আছি। আর বাকি যাঁরা আটকা পড়েছিলেন, তাঁরা আলাদা আলাদা লঞ্চে যাচ্ছেন।’

জানা গেছে, গতকাল শনিবার দুপুর ২টার দিকে ‘কপোতাক্ষ অনির্বাণ’ নামের লঞ্চে করে ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২১ জন, ফার্মেসি বিভাগের ১৭ জন, জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৮০ জন জেলা পুলিশ লাইন্স থেকে সিলেট শহরের দিকে রওনা দেন। কিন্তু, হঠাৎ লঞ্চের ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় রাত সাড়ে ৮টার দিকে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার-সংলগ্ন সুরমা নদীর চরে আটকা পড়েন। প্রচণ্ড বৃষ্টি, বাতাস আর নদীর ঢেউ তাঁদের বিপদগ্রস্ত করে ফেলে।’

সুনামগঞ্জে বন্যায় আটকে পড়ার পর উদ্ধার হওয়া ঢাবি শিক্ষার্থীদের একাংশ। ছবি : সংগৃহীত

আটকে পড়া শিক্ষার্থী শোয়াইব আহমেদ গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বলেছিলেন, ‘আমরা সুনামগঞ্জ হয়ে সিলেটের উদ্দেশে যাওয়ার সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে দোয়ারাবাজার এলাকায় পৌঁছালে আমাদের নৌযান থেমে যায় এবং এর দুটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। এজন্য আমরা মাঝ রাস্তায় আটকে যাই। এখন, একদিকে রাতের অন্ধকার, আর অন্যদিকে চারপাশে পানি আর পানি। প্রচণ্ড বৃষ্টি ও ঢেউয়ে আমরা জীবন-শঙ্কায় আছি।’

আরেক ঢাবি শিক্ষার্থী সাদেকুর রহমান সানী গতকাল রাত ১১টার দিকে বলেছিলেন, ‘লঞ্চ নদীতে আটকে আছে। দুই ঘণ্টা ধরে আটকে আছি আমরা। সেনাবাহিনী বা অন্য উপায়ে জরুরি সাহায্যের অনুরোধ করছি। সবার কাছে দোয়া চাই। আল্লাহ ভরসা। আর এ জায়গাটা দোয়ারাবাজার ও ছাতকের কাছাকাছি।’

আটকে পড়া ওই শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা কামনা করেছিলেন ঢাবির প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান আবুল মনসুর আহাম্মদও শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন।

গত ১৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে সুনামগঞ্জ ভ্রমণে গিয়ে বন্যায় আটকা পড়েন ঢাবির ২১ শিক্ষার্থী। পরে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পানসী রেস্তোরাঁ থেকে তাঁদের উদ্ধার করে গত শুক্রবার বিকেলে জেলা পুলিশ লাইন্সে নেওয়া হয়। পরে গতকাল শনিবার ওই শিক্ষার্থীরা আবার আটকা পড়েন।