হজক্যাম্পে থাকা না থাকা নিয়ে ইতালি ফেরতদের বিক্ষোভ
ইতালির রোম থেকে আসা ১৪২ বাংলাদেশিকে নেওয়া হয়েছে রাজধানীর আশকোনা হজক্যাম্পে। সকালে হজক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে তারা সেখানে অবস্থান করতে চাচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে শনিবার দুপুর ২টার দিকে যাত্রী ও তাদের স্বজনরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে সেখানে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই যাত্রীরা সকাল ৮টায় ঢাকায় আসেন।
আজ শনিবার বিকেলে বিষয়টি এনটিভি জানলাইনকে জানিয়েছেন হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ। তিনি বলেন, ‘ইতালি ফেরত যাত্রীরা হজক্যাম্পে থাকতে চাচ্ছিলেন না। সকাল থেকেই তারা আমাদের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে বারবার হট্টগোল করছিলেন। একপর্যায়ে দুপুরের দিকে যাত্রীরা এবং তাদের স্বজনরা গেটের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন।’
মাসুম বিল্লাহ (ছদ্মনাম) তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে চলতি মাসের ৭ তারিখে ইতালি থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন। আজ সকালে তাঁর শাশুড়িসহ একই পরিবারের মোট পাঁচজন ইতালি থেকে বাংলাদেশে এসেছেন।
মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘যাত্রীদের নিয়ে কী করা হবে না হবে তা সঠিকভাবে এখন পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি আমাদেরকে। তা ছাড়া এখানে থাকারও পরিবেশ নেই। প্রচুর মশা।’
মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘সবাই সারারাত জার্নি করে এসেছেন। কিন্তু এখনো কাউকে রুম দেওয়া হয়নি। কাউকে একটু রেস্ট নেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়নি। সবাই খুবই ক্লান্ত। যাত্রীদের আত্মীয়রা বারবার হজক্যাম্প কর্তৃপক্ষের কাছে এই ব্যাপারে জানতে চাইলেও কেউ নির্দ্দিষ্ট করে কিছু বলছেন না। সেজন্য দুপুরের দিকে রাগে-ক্ষোভে সবাই বিক্ষোভ করেছেন। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছিল সেসময়। পুলিশের সঙ্গেও কথা কাটাকাটি হয়। তবে এখন সব ঠিক হয়ে গেছে। যাত্রীদের রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে এখন।’
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, ‘যাত্রীরা ভেবেছিল তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। কিন্তু তাদের নেওয়া হচ্ছে কোয়ারেন্টিনে। এই পরিস্থিতির জন্য আসলে যাত্রীরাও প্রস্তুত ছিলেন না। তা ছাড়া বহুদুর থেকে জার্নি করে এসেছেন। শরীর স্বাভাবিকভাবেই ক্লান্ত থাকার কথা। এ ছাড়া আশকোনা হজক্যাম্পের কোয়ারেন্টিনেরও যে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে সেটাও কিন্তু ঠিক না। সব মিলিয়ে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এখন পরিস্থিতি ঠিক আছে। আমরা যাত্রীদের বুঝিয়েছি তাদেরকে এখুনি ছেড়ে দিলে কী কী সমস্যা হতে পারে। সেই বিষয়গুলো তারাও বুঝেছেন। এখন তারাও এখানে থাকতে চান। তারাও চান না, তাদের জন্য তাদের পরিবারের কেউ আক্রান্ত হোক।’
এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) নাবিদ কামাল শৈবাল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ক্যাম্পের গেটে একটি বাজে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সেখানে অবস্থান নিয়েছিলাম। তবে আমরা কারো সঙ্গেই খারাপ ব্যবহার করিনি। আমরা স্রেফ ছিলাম, জাতে বাজে পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেজন্য।’