হবিগঞ্জ ছাত্রলীগের সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

Looks like you've blocked notifications!
বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন আহমদকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহিকে (ইনসেটে) এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে জেলা ছাত্রলীগের একাংশ। ছবি : এনটিভি

বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন আহমদকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহিকে এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে জেলা ছাত্রলীগের একাংশ। আজ বুধবার জেলা ছাত্রলীগের একটি অংশ হবিগঞ্জ শহরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে এ ঘোষণা দেয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম কাউসার, হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি শুভ চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাওন আল হাসান, পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জুবেদ আহমেদ সবুজ ও খান মোহাম্মদ সাগর, জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক সাইদুর রহমান, বৃন্দাবন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শুভ বাতেন চৌধুরী প্রমুখ।

এ সময় ছাত্রলীগের নেতারা বলেন, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন আহমদ আমাদের হবিগঞ্জের গর্ব। মাহির মতো নামধারি ছাত্রলীগ নেতারা যখন তাঁকে নিয়ে মন্তব্য করেন, তখন আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমরা চাই প্রশাসন যেন এ বেয়াদবের বিচার করে। যতদিন তাঁর বিচার হবে না, ততদিন তাঁকে এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না। তাঁকে এলাকায় অবাঞ্ছিত করার ঘোষণা করা হলো।

মহিবুর রহমান মাহির বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি এক বছরের জন্য সাইদুর রহমানকে সভাপতি ও মহিবুর রহমান মাহিকে সাধারণ সম্পাদক করে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদন দেন তৎকালীন ছাত্রলীগের  সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। কমিটি অনুমোদনের কিছুদিন পরেই নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন সাইদুর রহমান ও মহিবুর রহমান মাহি।

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে জাপ্পি নামের স্থানীয় ছাত্রলীগের এক কর্মীর কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহি। এরপর জহিরুল ইসলাম রুপম নামের আরও একজনের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নেন মাহি নিজেই। পদ বাণিজ্যের এ অভিযোগে উঠলে গত ৩০ জুলাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

এর আগে ২০১০ সালে হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানায় গরু চুরির মামলা হয় মাহির বিরুদ্ধে। মামলা নম্বর ৭, তারিখ ৯/৩/২০২০। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনেও মাহির নাম ছিল।

এ ছাড়া গত ১৯ এপ্রিল হবিগঞ্জের স্থানীয় একটি পত্রিকার অফিসে মাহির নেতৃত্বে হামলা করা হয়। এরপর পত্রিকাটির সম্পাদকের বাসভবনেও হামলা করেন মাহি। এ ছাড়া মাহির বিরুদ্ধে ভূমি দখল ও চাঁদাবাজির একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহি এনটিভি অনলাইন বলেন, ‘আমি মন্ত্রী মহোদয়ের নাম উল্লেখ করে কিছু বলিনি। আর গরু চুরির ঘটনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভুল করে আমার নাম দিয়েছিলেন, পরে আদালত আমাকে নির্দোষ ঘোষণা করেন।’

পত্রিকা অফিসে হামলার বিষয়ে মাহি বলেন, ‘ওই সাংবাদিকেরা আমার বিরুদ্ধে একাধিক নিউজ করেছে। তারা মাদকের সঙ্গে জড়িত। সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে যুবলীগ, ছাত্রলীগ মিলে আমরা তাদের প্রতিরোধ করেছি।’