হাজি সেলিমের ছেলেকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে : ডিসি সাজ্জাদ

Looks like you've blocked notifications!

নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদকে মারধর ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজি মো. সেলিমের ছেলে ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইরফান সেলিমসহ আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এর আগে ইরফান সেলিম, গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাত তিন-চারজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় মামলা হয়েছে। গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা জোনের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গতকাল বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ নীলক্ষেত থেকে বই কিনে তাঁর স্ত্রীসহ মোটরসাইকেলে করে ক্যান্টনমেন্টে যাচ্ছিলেন। একটি জিপ যার মধ্যে সংসদ়্ সদস্যের স্টিকার লাগানো ছিল। ওই গাড়িটি পেছন থেকে মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। পরে মোটরসাইকেলটি থামিয়ে পরিচয় দেন লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ। তিনি ধাক্কা দেওয়ার বিষয়টি জানতে চান। একপর্যায়ে গাড়িতে থাকা লোকজনের সঙ্গে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয় এবং উনি আহত হন। এ নিয়ে রাতে জিডি করার পর সকালে তিনি মামলা দায়ের করেছেন। এটা মূলত মারধরের ঘটনা। মামলায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। ইতোমধ্যে অভিযুক্তদের গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। মামলার এজাহারনামীয় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ডিসি সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তাকে নিয়ে ঘটনার স্থান পরিদর্শন করেছি। আমরা এখানে সতর্কতার সঙ্গে সকল টেকনোলজি ব্যবহার করে এবং নথি সংগ্রহ করেছি। এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসামি মিজানকে দ্রুত আদালতে পাঠানো হবে। এ ছাড়া মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হাজি সেলিমের ছেলে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইরফান সেলিমকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। তিনি যত বড় ক্ষমতাধরই হোক না কেন, তাঁকে আইনের আওতায় আনা হবে।’ এজাহারে হত্যা হুমকির কথা রয়েছে বলে জানান ডিসি সাজ্জাদ।

এর আগে ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী এনটিভি অনলাইনকে জানান, গতকাল রাতের ঘটনায় আজ সোমবার সকালে একটি মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর ১৬। এ মামলার বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। এ ঘটনায় যুক্ত দুজনকে আটক করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর ধানমণ্ডির কলাবাগান সিগন্যালের পাশ দিয়ে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমদ বই কিনে তাঁর স্ত্রীসহ মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের গাড়ি তাঁর মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। ধাক্কা সামলে সড়কের পাশে মোটরসাইকেল থেকে নেমে গাড়িটির সামনে দাঁড়ান ওয়াসিফ। তাঁদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে গাড়ি থেকে কয়েকজন তাঁকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যার হুমকিসহ তুলে নেওয়ার হুমকি দেন তাঁরা। ‘সংসদ সদস্য’ স্টিকারযুক্ত গাড়িটির নম্বর ঢাকা মেট্রো-ঘ ১১-৫৭৩৬।

ওয়াসিফ আহমদ নিজেকে নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট পরিচয় দিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে হাজি সেলিমের গাড়ি থেকে দুজন ব্যক্তি নেমে এসে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফকে মারধর করে। একপর্যায়ে ওই কর্মকর্তা আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। ঘটনার পর পর গাড়িটি ফেলে এর নম্বরপ্লেট ভেঙে চলে যান হাজি সেলিমের ছেলে ও তাঁর দেহরক্ষীরা।

এ ঘটনায় রাতে ধানমণ্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ।

এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ওয়াসিফ আহমেদকে রক্তাক্ত দেখা যায়। ভিডিওতে তাঁকে মারধর করে তাঁর দাঁত ভেঙে ফেলা হয়েছে দাবি করলেও জিডিতে এ কথা উল্লেখ করা হয়নি।